পুঁজি হারানোর শঙ্কায় মাধবপুরের সবজি চাষিরা

এস এম রাকিব, মাধবপুর


মে ০২, ২০২০
০৯:০৯ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ০২, ২০২০
০৯:০৯ অপরাহ্ন



পুঁজি হারানোর শঙ্কায় মাধবপুরের সবজি চাষিরা

সবজি বিক্রি করে লাভের চিন্তা বাদ দিয়ে এখন পুঁজি ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সবজি চাষিরা। করোনাভাইরাসের কারণে পাইকার না আসায় এবং স্থানীয় বাজারে চাহিদা কম থাকায় পানির দামেও বিক্রি হচ্ছে না উৎপাদিত সবজি। আর সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় সবজি মজুদও করতে পারছেন না চাষিরা। এমন অবস্থায় জমি থেকে সবজি তুলে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা।

এর ফলে পুঁজি ফেরত পাবেন কি না এমন আশঙ্কায় দিন কাটছে সবজি চাষিদের। অথচ অন্যান্য বছর সবজি চাষ করেই উপজেলার বেশিরভাগ চাষি সংসার চালাতেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। তবে উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কম সুদে ঋণের আওতায় আনা হবে।

কৃষকরা জানান, এ বছর সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তবে অন্যান্য বছর বাইরে থেকে পাইকার এলেও এবার আসছেন না। সেজন্য চাষিরা স্থানীয় বাজারগুলোতে ১০ টাকা কেজি দরে টমেটো, ১৫ টাকা কেজি দরে সিনাত বেগুন এবং ৪০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন। আর এতো কম দামে সবজি বিক্রির ফলে শ্রমিক খরচ ও অন্যান্য খরচ তোলা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের কৃষক রাসেল মিয়া বলেন, আমি এবার ২৪০ শতক জমি ১ লাখ টাকায় লিজ নিয়ে টমেটো, সিনাত বেগুন ও কাঁচা মরিচের চাষ করেছি। জমিতে প্রথমদিকে মোটামুটি ভালো ফলন হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই খরার কারণে অনেক টমেটো নষ্ট হয়ে যায়। জমিতে যা সবজি আছে, তাও করোনার কারণে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী এলাকার পাইকাররা বাজারে না আসায় বিক্রি করতে পারছি না। সেজন্য পানির দামে গ্রামের বাজারে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

আরেক সবজি চাষি সোহেল মিয়া বলেন, বর্তমান বাজারে টমেটোর দাম কম। তাই যে টাকা দিয়ে জমিতে টমেটো, সিনাত বেগুন ও কাঁচামরিচ উৎপাদন করা হয়েছে তা বিক্রি হবে না। বাজারে টমেটোর দাম না থাকায় কৃষকরা শ্রমিকদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারছেন না। প্রত্যেক শ্রমিককে প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫শ টাকা দিতে হয়। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের পুঁজি হারিয়ে পথে বসতে হবে। আমরা সরকারের সহযোগিতা আশা করছি।

কৃষক রাসেল মিয়া বলেন, ২৪০ শতক জায়গায় টমেটো, সিনাত বেগুন ও কাঁচা মরিচ চাষ করতে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। ৫০ হাজার টাকার মতো এ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। অনেক জমিতে ভাইরাস আক্রমণ করেছে। টমেটোর প্রথমদিকে ভালো ফলন হলেও খরার কারণে অনেক টমেটো নষ্ট হয়ে গেছে। খরার কারণে অনেক ক্ষতি হয়েছে। বেশি ক্ষতি হচ্ছে করোনায়। দূরের পাইকাররা আসছে না বাজারে। গাড়ি আসতে জায়গায় জায়গায় বাধার সৃষ্টি হয়।

তবে মাধবপুর উপজেলার উপ-কৃষি কর্মকর্তা তাপস চন্দ্র দেব বলেন, বাংলাদেশ সরকার কৃষকদের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। কৃষকদের ৪% সুদে ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে। যদি এটি চলমান হয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণের আওতায় আনতে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।

 

এসএম/আরআর