আলী আহমদ, জগন্নাথপুর
মে ০৭, ২০২০
০৩:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ০৭, ২০২০
০৩:৪৩ অপরাহ্ন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতিতে লকডাউন সীমিত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবাসী অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দল বেঁধে হাটবাজারে হাঁটছেন লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার (৭ মে) জগন্নাথপুরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র জগন্নাথপুর পৌরশহরের সদরের জগন্নাথপুর বাজারে সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্যদিনের তুলনায় জনসমাগম বেশি ছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, সবজি বাজার, মাছ বাজারসহ নিত্যপণ্যের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে। এছাড়া মধ্যবাজারের বড় গলিতে দল বেঁধে লোকজনকে চলাফেরা করতে দেখা গেছে। অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে করোনা সংক্রমণের। এরই মধ্যে জগন্নাথপুরের ৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে নিত্যপণ্য ও ওষুধের দোকান ছাড়া অন্য সকল দোকানপাট সন্ধ্যা থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২৫ মার্চ থেকে গণপরিবহণও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে অঘোষিত লকডাউনের কবলে পড়েন উপজেলাবাসী। জনসাধারণকে ঘরে ফেরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনা সদস্যরা মাঠে নামেন। প্রশাসনের কঠোর তদারকিতে প্রথমদিকে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা মেনে চললেও দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ধৈর্যের বাঁধ যেন ভাঙতে থাকে।
আরও জানা গেছে, সম্প্রতি ৫ শতাধিক মানুষ নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে জগন্নাথপুরে এসেছেন। এর মধ্যে শুধু নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন দুই শতাধিক লোক। তারা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অবাধে ঘোরাফেরা করছে। জগন্নাথপুরে প্রথম করোনা রোগী হিসেবে ২৩ এপ্রিল জগন্নাথপুরের উত্তর নাদামপুর গ্রামে ১৮ বছরের এক তরুণ শনাক্ত হন। এখন পর্যন্ত জগন্নাথপুরে মোট ৬ জন করোনায় শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন স্বাস্থ্যকর্মী। অন্যরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্রগ্রামফেরত। আক্রান্তদের মধ্যে সবাই বয়সে তরুণ।
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব জানান, জগন্নাথপুর উপজেলা নানা কারণে এখন করোনার ঝুঁকিতে রয়েছে। একদিকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত লোকজন, অপরদিকে লকডাউন সীমিত হওয়াতে অবাধে হাটবাজারে লোকসমাগম ঘটছে। বেশিরভাগ মানুষ সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ঝুঁকি বেড়েছে।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আগত আড়াই শতাধিক লোকসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত লোকজন জগন্নাথপুর উপজেলাকে করোনার ঝুঁকিতে ফেলেছে। আমরা দিনরাত তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাতে কাজ করছি।
জগন্নাথপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মধু সুদন ধর বলেন, গতকাল (বুধবার) পর্যন্ত করোনা সন্দেহে ১৩৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে জগন্নাথপুরে ৬ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল আলম বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এবং মানুষকে ঘরমুখী করতে আমরা মাঠে নিরসলভাবে কাজ করছি।
এএ/আরআর