ঈদে সিলেটে হোটেল-রিসোর্টে নেই বুকিং, পর্যটন শিল্পে ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ২৪, ২০২০
০২:৫০ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২৪, ২০২০
০৩:০৪ অপরাহ্ন



ঈদে সিলেটে হোটেল-রিসোর্টে নেই বুকিং, পর্যটন শিল্পে ধস

সিলেটে সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও ঈদ এবং শীতে প্রচুর পর্যটক বেড়াতে আসেন। প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে সিলেটে রীতিমতো ঢল নামে পর্যটকদের।

ঈদের ১০-১৫ দিন আগে থেকেই বুকিং হয়ে যায় সিলেটের প্রতিটি হোটেল-রিসোর্ট। ঈদের ছুটিতে সিলেট জেলার জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুল, লালখাল, পান্তুমাই, সাদাপাথরসহ সিলেটের শাহজালাল (র:) ও শাহপরাণ (র:) মাজারে উপচে পড়া ভিড় থাকে। একইভাবে মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলোসহ কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মনিপুরী পাড়ায় এবং শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন চা-বাগান ও বাইক্কাবিল, কুলাউড়ার কালাপাহাড় ও হাকালুকি হাওরে অসংখ্য পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। সিলেট ও মৌলভীবাজার ছাড়া সুনামগঞ্জেও উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক পর্যটক ঘুরতে আসেন প্রতিবছর। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, নিলাদ্রী লেকে প্রচুর পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে এবার পর্যটন খাতে ধস নেমেছে। লকডাউন থাকায় এ বছর সিলেটসহ সারা দেশের হোটেল-রিসোর্টে নেই পর্যটক। উল্টো দীর্ঘদিন পর্যটকের আগমন বন্ধ থাকায় ঝুঁকিতে পড়েছে পর্যটন শিল্প। কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন মালিকরা।

হোটেলে- রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন বছরের এই সময়টায় আমাদের সবচেয়ে বেশি আয় হয়। দেশে নানা প্রান্ত এমনকি অনেক বিদেশী নাগরিক ও ঘুরতে আসেন সিলেটে। আর এতে করে তাদের হোটেলের প্রতিটা রুম ঈদের সপ্তাহ-দশদিন আগে থেকেই বুকিং হয়ে যেত। তবে এবার করোনার এই সংকটকালীন সময়ে হোটেলগুলোতে সেই আমেজ নেই।

হোটেল গোল্ডেন সিটির জেনারেল ম্যানেজার মৃদুল কান্তি দত্ত সিলেট মিররকে বলেন, ‘ মার্চ মাসের ২০ তারিখের পর আমাদের হোটেলে আর কোন পর্যটক আসেননি। বছরের ঈদের মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পর্যটক হোটেলে উঠতেন। দুই সপ্তাহ আগে থেকে বুকিং শুরু হত। তবে এবার এসবের কিছুই নেই।’

তিনি আরও বলেন ‘তবে হোটেল বন্ধ থাকলেও গত দুইমাস থেকে কর্মচারীদের বেতন বাড়িতে পাঠাতে হচ্ছে। আর কতদিন এভাবে চলবে কিছুই ঠিক করে বলা যাচ্ছে না। তাই সরকারি সহায়তা না আসলে আমরা বড় বিপদে পড়ব।’

একই অবস্থা মৌলভীবাজারের হোটেল-রিসোর্টের। জানা যায়, ঈদে মৌলভীবাজারে প্রচুর পর্যটক ঘুরতে আসেন। এর মধ্যে পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকতো শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে। এসব এলাকার হোটেল-রিসোর্টে এসময় ভিড় লেগে থাকতো। তবে এবার প্রতিটা হোটেল-রিসোর্টে শূন্যতা। করোনার কারণে র্দীঘদিন ধরে হোটেল – রিসোর্ট বন্ধ রয়েছে তাই পুঁজি হারানোর ভয়ে আছেন মালিকরা।

শ্রীমঙ্গলের শান্তিবাড়ি রিসোর্টের স্বত্তাধিকারী তানভীরুল আরেফিন লিংকন বলেন, ঈদকে ঘিরে আমাদের নানা রকমের পরিকল্পনা থাকতো। আর ঈদ মৌসুমে আমাদের ব্যবস্যাও সবচেয়ে বেশি হত। তবে এবার এক ভিন্ন পরিস্থিতি। 

তিনি আরও বলেন, ‘মার্চ মাসের ১৭ তারিখে আমরা রিসোর্ট বন্ধ করি। তবে বন্ধ করলেও রিসোর্টের রক্ষণাবেক্ষনের জন্য কর্মচারী রাখতে হয়। এছাড়া আমাদের সব কর্মীদের কোনভাবে বেতন দিয়ে যাচ্ছি। এখন সরকারি সহায়তা ছাড়া এবিপদ থেকে আমরা বের হতে পারবো না। আমাদের অন্তত ৬ মাসের মূলধন দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হবে।’

এনএইচ/বিএ-১১