উজ্জ্বল ধর
মে ২৪, ২০২০
০৩:৫২ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ২৪, ২০২০
০৩:৫২ অপরাহ্ন
করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে সিলেটের ওসমানীনগরে। ইতোমধ্যে উপজেলায় ৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এদেরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। কিন্তু এরপরও সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে না। লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাজারটি। প্রশাসনিক কোন উদ্যোগও চোখে পড়ছে না বলেও অভিযোগ সচেতনমহলের।
করোনার সংক্রমণ রোধে উপজেলার প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র গোয়ালাবাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও পরবর্তীতে সে সিদ্ধান্তে অটল থাকেননি ব্যবসায়ীরা। বেশ নাটকিয়তার পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় প্রতিদিন সকাল থেকেই গোয়ালাবাজারে হাজার হাজার লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। অন্যদিকে, উপজেলার অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র তাজপুর ও দয়ামীর, বুরুঙ্গা বাজারেও জমে উঠছে ঈদ বাজার। সরকারী স্বাস্থ্যবিধি ও পারস্পরিক দূরত্ব মেনে ব্যবসা পরিচালনার নির্দেশ থাকলেও বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে কোন সচেতনতা নেই।
গোয়ালাবাজারে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বস্ত্র বিপণি ছাড়াও জুতা-কসমেটিক্স সামগ্রীর দোকানগুলোতে ছিল নারী-পুরুষের ভিড়। অনেকে পরিবারসহ ঈদের কেনাকাটা করতে বেরিয়েছেন। বাজারের অলিগলিতে ক্রেতা আধিক্য দেখে বোঝার উপায় নেই যে দেশ কোনো এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাজারে আসা ক্রেতাসাধারণ মহামারি করোনা ভাইরাসকেও পাত্তা দিচ্ছেন বলে মনে হয় না। বরং ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে ক্রয়-বিক্রয়ের উচ্ছ্বসিত প্রতিযোগিতা চোখে পড়েছে।
স্কুল শিক্ষক নূর মিয়া বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে বাজার জমে উঠেছে। সরকারী সুরক্ষাবিধি মেনে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের দূরত্ব বাজায় রাখার কথা থাকলেও এক্ষেত্রে কোন ধরণের নিরাপত্তা চোখে পড়েনি। মনে হচ্ছে বাজারে জিনিস কিনলে করোনা ফ্রি-এমন অফারেই মানুষ ঈদ বাজার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে!’
গোয়ালাবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দেব বলেন, ‘একাধিকবার বৈঠকের পর ব্যবসায়ীদের ক্ষতির কথা ভেবে গোয়ালাবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্বসহ সরকারী সব ধরণের বিধি নিষেধ মেনে চলার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয়েছে। তবু কেউ যদি তা উপেক্ষা করেন অবশ্যই সমিতি ব্যবস্থা নেবে।’
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘করোনা মহামারি থেকে রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়ণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদেরও সামাজিক সুরক্ষা মেনে চলার জন্য বার বার বলা হচ্ছে। জনগণকে সচেতন করতে নানা উদ্যোগের পাশাপাশি একাধিক অভিযানও পরিচালনা করা হয়েছে। তবু হাট, বাজার, গ্রাম সবখানেই মানুষের ভীড়। মাস্ক-গ্লাভসের ব্যবহার বা নিয়মিত হ্যাণ্ড স্যানেটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যাপারেও অনেকে অনাগ্রহী। এসব ব্যাপারে প্রয়োজনে আরো কঠোর ভূমিকা নেওয়া হবে। করোনা সংক্রমণ রোধে যা যা করা দরকার প্রশাসন থেকে সব করা হবে। কিছুতেই করোনার বিস্তার ঘটতে দেওয়া যাবে না।’
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ওসমানীনগরে করোনায় আক্রান্ত ৯ জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আক্রান্তরা চিহ্নিত হবার পূর্বে যাদের সাথে মিশেছেন বা ঘুরেছেন তাদের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনা। কিন্তু এলাকার লোকজন এখনও করোনা সচেতনতায় উদাসীন।
বিএ-১৪