গোলাপগঞ্জে ৪২১ জনের নমুনা পরীক্ষা, আক্রান্ত ৩৬

ফারহান মাসউদ আফছর, গোলাপগঞ্জ


মে ২৬, ২০২০
০৮:১৩ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২৭, ২০২০
১২:৪২ অপরাহ্ন



গোলাপগঞ্জে ৪২১ জনের নমুনা পরীক্ষা, আক্রান্ত ৩৬

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন। উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ৪২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন, ৩ জন সুস্থ হয়েছেন এবং হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ১৯ জন। এছাড়া রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছেন ২০ জন।

চিকিৎসাধীন ৩২ জনের শারিরীক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিস্বর চৌধুরী।

জানা যায়, উপজেলায় প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় গত ২ মে উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের কানিশাইল এলাকায়। তিনি সুনামগঞ্জ থেকে এসেছিলেন। দ্বিতীয় করোনা রোগী শনাক্ত হয় উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের জাঙ্গালহাটা গ্রামে। উপজেলার পৌর সদরের টিকরবাড়ি এলাকায় গত ১৪ মে এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর থেকে উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। টিকরবাড়ির বৃদ্ধের সংস্পর্শে আসা একটি বাড়ির ১৩ জন একদিনে সংক্রমিত হন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় ২৪ জন, ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নে ২ জন, আমুড়া ইউনিয়নে ২ জন, ভাদেশ্বর ইউনিয়নে ১ জন, লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নে ১ জন এবং বাদেপাশা ইউনিয়নে ৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে উপজেলার আছিরগঞ্জ বাজারের পল্লী চিকিৎসক আবুল কাশেমের করোনাভাইরাসে মৃত্যু হলে উপজেলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়ে যায়। প্রতিদিন নতুন নতুন আক্রান্ত এবং পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যুতে মানুষ ভীত হয়ে পড়েন।

উপজেলার রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী মিজানুর রহমান চৌধুরী রিংকু বলেন, আবুল কাশেমের মৃত্যু এবং পৌরসভার টিকবাড়িতে এক সঙ্গে ১৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের কিছু মানুষের অবিবেচকের মতো কাজ সকলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে।

তিনি বলেন, আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন সচেতনতা। করোনা প্রতিরোধ এবং চিকিৎসায় সরকার ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আমরা সাধারণ মানুষ শুধু নির্দেশনা মেনে চলে সহযোগিতা করতে হবে। সচেতন না হলে আমাদেরকে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

নর্থইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী মনজুর সাফি চৌধুরী এলিম বলেন, করোনা মোকাবেলায় সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। করোনার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন ও জীবিকার ক্ষতির সম্মুখীন হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা মোকাবেলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার। তাছাড়া সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে ডাক্তার, পুলিশ ও মাঠ প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশংসনীয় কাজ করছেন। এখন প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ঘরে থাকতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনিস্বর চৌধুরী জানান, করোনা প্রতিরোধে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসাধীন সবাই ভালো আছেন।

তিনি সচেতনতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, স্বাস্থ্য সচেতনতাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বেশি বেশি সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা খুব কঠিন নয়। সচেতনভাবে এই সামান্য কাজ আমরা করতে পারলেই বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবো। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হয়েও আমরা অনেক কাজ করতে পারি।

 

এফএম/আরআর-১০