ব্রয়লার মুরগির খামারে স্বাবলম্বী শায়েস্তাগঞ্জের হাকিম

সৈয়দ হাবিবুর রহমান ডিউক, শায়েস্তাগঞ্জ


মে ৩১, ২০২০
০১:০২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ৩১, ২০২০
০২:০৭ পূর্বাহ্ন



ব্রয়লার মুরগির খামারে স্বাবলম্বী শায়েস্তাগঞ্জের হাকিম

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সৌরভকান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম। তাঁর মূল বাড়ি বানিয়াচংয়ে। বিয়ে করেছেন শায়েস্তাগঞ্জের সুরাবই গ্রামে। বিয়ের পর থেকে এই গ্রামেই তাঁর বসবাস। ব্রয়লার মুরগির ব্যবসা করে এখন স্বাবলম্বী আব্দুল হাকিম। ব্যক্তিগত জীবনে ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক তিনি।

প্রায় ৭-৮ বছর আগে জেলার বানিয়াচংয়ের গ্যানিংগঞ্জ বাজারে ২টি মুরগির খামার দিয়েছিলেন আব্দুল হাকিম। তারপর আস্তে আস্তে তাঁর দিন বদলাতে থাকে। প্রতিমাসে এক চালান বিক্রিতে লাভ আসে ১০-১৫ হাজার টাকা।

পাঁচ বছর আগে তিনি বিয়ে করে শায়েস্তাগঞ্জের সুরাবই গ্রামে বসবাস করা শুরু করেন। তাঁর শ্বশুরের ২ শতক জায়গায় তিনি একটি মুরগির খামার দেন। পাশাপাশি এই মুরগি বিক্রি করার জন্য অলিপুর বাজারে 'মা-বাবার দোয়া পোল্ট্রি হাউস' নামের একটি দোকানও পরিচালনা করছেন। এখন মাস শেষে সহজেই ৩০-৩৫ হাজার টাকা উপার্জন করা সম্ভব হয় বলে জানালেন আব্দুল হাকিম।

বর্তমানে তাঁর খামারে ৬০০টি বাচ্চা মোরগ আছে। তিনি জানান, চলতি মে মাসের ৫ তারিখে ৫০ গ্রাম ওজনের বাচ্চা মোরগ তিনি ৩৬ টাকা দরে কিনে এনেছিলেন। এখন মুরগির ওজন এক কেজি। এক কেজি ওজন হতে সময় লেগেছে মাত্র ২৫ দিন। আরও একমাস গেলে প্রতিটি মুরগি প্রায় ২ থেকে আড়াই কেজি ওজনের হয়ে উঠবে।

তিনি আরও জানান, এই ৬০০টি মুরগির পেছনে তাঁর যাবতীয় খরচ হয়েছে ৯৫ হাজার টাকা। মুরগির দাম ভালো থাকলে তিনি ২০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।

এ ব্যবসায় আসার পেছনে কারও অবদান আছে কি না জানতে চাইলে আব্দুল হাকিম জানান, এতে তাঁর মামা মতিউর রহমানের অবদান সবচেয়ে বেশি। কখনও কখনও বাচ্চা মুরগি মারা গেলে লোকসানও গুনতে হয়। তবে আব্দুল হেকিম সংসার নিয়ে এখন সুখেই আছেন। তিনি এই ব্যবসা আরও বড় পরিসরে করতে চান। সেজন্য তিনি ঋণ পেতে পূবালী ব্যাংকে কারেন্ট একাউন্টও করেছেন। তবে কিন্তু এখনও ঋণ পাননি।

ব্রয়লার মুরগীর খামার দিয়ে লাভবান হয়েছেন এমন তালিকায় আরও আছেন উপজেলার পুরাসুন্দা গ্রামের শেখ সোহাগ, খোকন তালুকদার, মন্নান মিয়া, রাসেল মিয়াসহ অনেকেই। স্বল্প পরিসরে অনেকেই ব্রয়লার মুরগির খামার দিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। স্বল্প পুঁজি নিয়েই শুরু করা যায় এই ব্যবসা। তাই অনেকেই এই ব্যবসায় ঝুঁকছেন। উপজেলার ব্রাক্ষণডুরা, সুরাবই, পুরাসুন্দা, নুরপুর, নসরতপুর ও শায়েস্তাগঞ্জের প্রায় ৭০-৮০ জন মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই ব্যবসায় জড়িত। তাদের প্রত্যেকেই এখন অনেকটা স্বাবলম্বী।

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা রমপদ দে বলেন, আমাদের সরকারিভাবে সহায়তার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশন করলে আমরা আব্দুল হাকিমকে সরকারি কোনো উদ্যোক্তা ঋণ দেওয়ার চেষ্টা করব।

শায়েস্তাগঞ্জে মোট কতগুলো খামার আছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, উপজেলায় আমি নতুন যোগদান করেছি। আমি এসে এ পর্যন্ত ৩টি রেজিস্ট্রেশন করেছি। আমাদের ডাটাবেইজের কাজ চলছে। সবাইকে এর আওতায় আনা হবে।

 

এসডি/আরআর-০১