নিস্তব্ধতা ভেঙে জেগে উঠেছে শহর

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ৩১, ২০২০
০২:১৭ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ৩১, ২০২০
১০:৫৮ অপরাহ্ন



নিস্তব্ধতা ভেঙে জেগে উঠেছে শহর
খুলেছে বিপণিবিতান, চলছে গণপরিবহন

ছবি : এইচ এম শহীদুল ইসলাম

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি শেষ। সে হিসেবে প্রায় দুই মাস পর আজ রবিবার (৩১ মে) ছিল প্রথম কর্মদিবস। এ অবস্থায় নগরের প্রায় ৯০ শতাংশ দোকানপাট ও বিপণিবিতান পুনরায় খুলেছে। ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রেনও সকালে স্টেশন ত্যাগ করেছে। অফিসপাড়াও ছিল সরগরম। সবমিলিয়ে প্রথম কর্মদিবসেই নগরে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়।

এদিকে, সব কিছু সচল হলেও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না। অনেকেই মাস্ক ব্যবহার না করেই বাইরে এসেছেন। শারীরিক দূরত্বও মানা হচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রে। এতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

নগরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, আম্বরখানা ও বন্দরবাজার এলাকায় একাধিকবার যানজট  ছিল। লালদিঘিরপাড় এলাকাসহ ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা অবস্থিত, এমন স্থানগুলোতে ছিল গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। জিন্দাবাজার, নয়াসড়ক, আম্বরখানা ও বন্দরবাজার এলাকার প্রায় সবকটি এলাকায় বিপণিবিতান চালু হয়েছে। কিছু কিছু বিপণিবিতানের প্রধান ফটক বন্ধ রেখে ছোট্ট একটি ফটক খোলা রেখে ক্রেতাদের ভেতরে ঢুকানো হচ্ছে। অবশ্য কিছু কিছু বিপণিবিতানে ক্রেতারা ঢুকার আগে তাঁদের শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটাতেও দেখা গেছে। কিছু রেস্তোরাঁ ও দোকানপাট ছাড়া মোটামুটি ৯০ ভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানই চালু হয়েছে। 

একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় পর দোকান খোলা হলেও প্রথম দিনের হিসেবে বেচাকেনা একেবারেই মন্দ ছিল না। যেসব ক্রেতারা দোকানে এসেছিলেন, তাঁরা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতেই এসেছিলেন। তবে প্রথম দিনটি দোকান পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করতেই বেশি সময় কাটাতে হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কেনাকাটা আবার পুরোদমে শুরু হওয়ার প্রত্যাশা করছেন তাঁরা। তবে যেহেতু এখনো করোনা-পরিস্থিতি কাটেনি, তাই ঝুঁকি এড়াতে কেনাকাটাকালে সামাজিক দূরত্ব মেনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

আম্বরখানা এলাকায় কথা হয় সিএনজি অটোরিকশা চালক মাহতাব আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, অনেক দিন পর তিনি গাড়ি নিয়ে যাত্রী পরিবহনের জন্য বেরিয়েছেন। যাত্রীও পাচ্ছেন তিনি। লালবাজার এলাকার মাছ বাজারে কথা হয় সিরাজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। নগরের কামালগড় এলাকার ওই বাসিন্দা জানান, ঝুঁকি এড়াতে তিনি মাস্ক পরে বের হয়েছেন। আজ বাসার বাইরে বের হয়ে দেখেন, প্রচুর মানুষ বেরিয়েছেন। শহর দীর্ঘদিনের নিস্তব্দতা ভেঙে পুনরায় জেগে উঠেছে। ভয় আর আতঙ্ক আছে, তবে মানুষের চলাচলের এ দৃশ্য দেখে তাঁর ভালো লেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন।

আজ সকালে সিলেট রেল স্টেশন থেকে কালনী এক্সপ্রেস সীমিত আকারে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার থেকে কালনী এক্সপ্রেসের পাশাপাশি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যেও আরেকটি পৃথক ট্রেন যাত্রী পরিবহন করবে। রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে অনুসরণ করে সীমিতসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, সোমবার থেকে পুনরায় যাত্রীবাহী বাস সীমিতসংখ্যক যাত্রী নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রওয়ানা হবে।