বড়লেখায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেলেন পাঁচ চা শ্রমিক

বড়লেখা প্রতিনিধি


জুন ০৪, ২০২০
০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ০৪, ২০২০
০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন



বড়লেখায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেলেন পাঁচ চা শ্রমিক

'বাবা-দাদাসহ বংশ পরম্পরায় মাটির ঘরেই বসবাস করে আসছি। ঝড়-তুফানের রাতে আকাশে মেঘের গুড়ু গুড়ু শব্দ শুরু হলেই মাটির ঘরের দেয়াল ও চালা ভেঙে পড়ার ভয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাতাম। কখনও স্বপ্নেও ভাবিনি কোনোদিন পাকা ঘরে ঘুমাবো। সেই না দেখা স্বপ্ন পূরণ করলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।'

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নির্মিত পাকা ঘর পেয়ে খুশিতে আবেগাপ্লুত হয়ে এসব কথা বলেন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণগুল (কেরামতনগর) চা-বাগানের দরিদ্র চা শ্রমিক রমন চন্দ্র ঘোষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে ‘মডেল আবাসন’ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বড়লেখায় মোট ৫ জন দরিদ্র চা শ্রমিককে পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে উপজেলা সমাজ কল্যাণ পরিষদ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান ও সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের বিশেষ তত্ত্বাবধানে গত ৩১ মে মডেল আবাসন প্রকল্পের ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৪ লক্ষাধিক টাকা।

আজ বুধবার (৩ জুন) ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান নবনির্মিত পাকা ঘরগুলো পরিদর্শন করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন, নিউ সমনবাগ চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী খান, ছোটলেখা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক শাকিল আহমদ, দক্ষিণগুল (কেরামতনগর) চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মাসুম আহমদ প্রমুখ।

সরকারি ঘরপ্রাপ্ত ছোটলেখা চা-বাগানের মসজিদের মোয়াজ্জিম নানু মিয়া জানান, বাঁশ-বেতের বেড়া ও খড়ের চালার ঘরে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ২ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতাম। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার পরিবেশ ছিল না। সরকার শুধু পাকা ঘর নির্মাণ করেই দেয়নি। বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে প্রয়োজনীয় বাতি ও ফ্যান লাগিয়ে দিয়ে আমাদেরকে উন্নত জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি'র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সরকারি ঘরপ্রাপ্ত দরিদ্র চা শ্রমিক নানু মিয়া, রমন চন্দ্র ঘোষ, সমনবাগ বাগানের চা শ্রমিক নানকা রবি দাস, পাল্লাথল বাগানের চা শ্রমিক রিতা বক্তা ও বাহাদুরপুর বাগানের চা শ্রমিক শ্রীধরমনি শুভকাউ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে ‘মডেল আবাসন’ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বড়লেখায় ৫টি দরিদ্র চা শ্রমিক পরিবারের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল। স্থানীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের পরিবশে, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন মহোদয়ের বিশেষ দিকনির্দেশনায় ২টি বেডরুম, সংযুক্ত টয়লেট ও রান্নাঘরসমেত পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে পরিবেশমন্ত্রী একটি ঘর পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কার কারণে অপর ৪টি ঘরের নির্মাণ কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়। তবে গত ৩১ মে সেগুলোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আজ (বুধবার) মন্ত্রী সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং ঘরের নির্মাণ কাজ মানসম্মত হওয়ায় উপকারভোগীদের হাতে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেন।

 

এজে/আরআর-১১