জকিগঞ্জে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, বিপাকে বৈধ ব্যবসায়ীরা

ওমর ফারুক, জকিগঞ্জ


জুন ১০, ২০২০
০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১০, ২০২০
০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন



জকিগঞ্জে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা, বিপাকে বৈধ ব্যবসায়ীরা

সিলেটের জকিগঞ্জ শহরে সড়ক ও জনপথের রাস্তা দখল করে ভাসমান ফল ব্যবসা করায় বিপাকে পড়েছেন ভাড়া দোকান নিয়ে বসা ফল ব্যবসায়ীরা। কতিপয় লোকজন সড়কের উপর ভাসমানভাবে ফলের ব্যবসা করায় বৈধ ফল ব্যবসায়ীরা মূলধন হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জকিগঞ্জ শহরের শিশুপার্কের পাশে কতিপয় ব্যবসায়ীরা সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে উৎফুল্লভাবে হাঁকডাকের মাধ্যমে ও ভ্যান দিয়ে ঘুরে ঘুরে ফল বিক্রি করছেন। এতে শহরে চড়া দামে দোকান ভাড়া করে যারা ব্যবসা করছেন, তাদের চোখে-মুখে বিষাদের কালো ছাপ। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ বিরাজ করছে। মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রতিকার চেয়ে বৈধ কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের কাছে লিখিতভাবে প্রতিকার চেয়েছেন।

লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, শহরের শিশুপার্কের পূর্ব পাশে তৎকালীন মেয়র আব্দুল মালেক ফারুক ফল ব্যবসার জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু গতবছরের শেষদিকে বর্তমান মেয়রের পরামর্শে পৌরসভার সৌন্দর্য বৃদ্ধির স্বার্থে তা স্থানান্তরিত করে শহরের পূর্ব পাশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ব্যবসায় লোকসান হওয়ার কারণে পরে ফল ব্যবসায়ীরা দোকান ভাড়া করে ফলের ব্যবসা শুরু করেন। সম্প্রতি কিছু ভ্রাম্যমাণ ফল ব্যবসায়ী ফুটপাত দখল করে এবং ঠেলা ও ভ্যান দিয়ে শহরে ঘুরে ঘুরে ফলের ব্যবসা করায় তাদেরকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এতে দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন ও বিদ্যুৎ বিল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ফল ব্যবসায়ীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাসমান ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে জকিগঞ্জ পৌরসভা ও পুলিশের কাছে প্রতিকার দাবি করেছেন। 

ফল ব্যবসায়ী আবুল খায়ের রেনু ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির স্বার্থে বেশি টাকা দিয়ে দোকান ভাড়া রেখে ফলের ব্যবসা শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু এখন ফুটপাত দখল করে কতিপয় লোক ফলের ব্যবসা শুরু করায় দোকান ভাড়া নিয়ে বসা ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। প্রতিদিন তাজা ফল আমদানি করার কারণে তাদের আমদানি খরচ বেশি হওয়ায় কোনোভাবেই এসব ফুটপাতের অবৈধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে টিকে থাকতে পারছেন না তারা। শহরে এভাবে ভাসমান ফল ব্যবসায়ী থাকলে তারা মূলধন হারিয়ে পথে বসতে হবে। অন্যদিকে ভ্রাম্যমাণ ফল ব্যবসায়ীরা বিষাক্ত ও পচা ফলমূল বিক্রি করায় এর প্রভাব পড়ছে তাদের ব্যবসায়।

আরেক ফল ব্যবসায়ী বাহার উদ্দিন জানান, ভাসমান ফল ব্যবসায়ীদের কারণে দোকান ভাড়া করা বৈধ ফল ব্যবসায়ীদের ফলমূল পচে নষ্ট হয়। সিলেট থেকে ফল এনে ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। ভাসমান ব্যবসায়ীদের ফুটপাত থেকে উচ্ছেদ না করলে তাদের মূলধন হারাতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাসমান ফল ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করার আহবান জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা খলিল উদ্দিন জানিয়েছেন, কোনোভাবেই কেউ ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করতে পারবেন না। যারা ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. আব্দুন নাসের জানিয়েছেন, যারা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন, তাদেরকে উচ্ছেদ করেছি। এর পরও আবার কেউ ফুটপাত দখল করলে আইনগত ব্যবস্থা নেব। মাইকিং করে সবাইকে সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

 

ওএফ/আরআর-১১