শায়েস্তাগঞ্জে ঋণের কিস্তি আদায়ে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ

শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি


জুন ১১, ২০২০
০১:০১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ১১, ২০২০
০১:০১ পূর্বাহ্ন



শায়েস্তাগঞ্জে ঋণের কিস্তি আদায়ে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ

সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাবে জীবনযাত্রা হুমকির সম্মুখীন। মারাত্মকভাবে আর্থিক সংকটে চরম দুর্দশায় রয়েছেন কর্মহীন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষ। এসব বিষয় বিবেচনা করে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি আদায় শিথিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি। দেশের এনজিও বা ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে সেসব প্রতিষ্ঠান, আগামী জুন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনো কিস্তি জোর করে আদায় করতে পারবে না কেউ। তবে কেউ স্বেচ্ছায় কিস্তি দিলে তা নেওয়া যাবে উল্লেখ করে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি।

তবে এসব প্রজ্ঞাপনের তোয়াক্কা না করে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় হবিগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থা, নিশান, বিডিএস, আশা, টিএমএসএস, ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক এর মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণগ্রহীতাদের চাপ প্রয়োগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর, সুতাং, ব্রাক্ষণডুরা, জগতপুর, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকাসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে গ্রাহকদেরকে কিস্তির টাকা পরিশোধ করার জন্য দোকানে ও বাড়িতে গিয়ে চাপ দিচ্ছেন এসব এনজিও সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মীরা। আবার কেউ কেউ সময়মতো কিস্তি প্রদান করার জন্য ফোন করে তাগাদা দিচ্ছেন।

উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সুরাবই গ্রামের সৈয়দ ঝিনুক আহমেদ বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ব্যবসা করে সংসার খরচ ও সপ্তাহে দেড় হাজার টাকা এনজিও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছি। প্রায় দুইমাস করোনাভাইরাসের কারণে এনজিও'র কিস্তি বন্ধ ছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে এনজিও সংস্থা আশা কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছে।

অলিপুরের টেলিকম ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, টানা লকডাউনের জন্য দোকান খুলতে পারিনি। এ কারণে আমাদের আয়-রোজগার কমে গেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকদিন ধরে হবিগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থার কর্মীরা ঋণের কিস্তির জন্য দোকানে এসে চাপ প্রয়োগ করছেন।

শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের সোয়েব মিয়া বলেন, শায়েস্তাগঞ্জের বিডিএস নামের একটি সংস্থা থেকে নিয়মিত কিস্তি দেওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছে, যা আমার মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছে। কি করব ভেবে উঠতে পারছি না।

এ বিষয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আশা'র শায়েস্তাগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক জিয়াউল করিম বলেন, আমাদের গ্রাহকদের কাছে মাঠকর্মীরা যাচ্ছে। যারা স্বেচ্ছায় কিস্তি দেন, তাদের কিস্তি নেওয়া হচ্ছে। কোনো প্রকারের চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে না। আমাদের শাখার প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহক রয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে অর্ধেক গ্রাহকও কিস্তি দেননি।

টিএমএসএস শায়েস্তাগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চলছে। কোনো জোর-জবরদস্তি করা হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমি আক্তার বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ না মানলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

 

এসডি/আরআর-১৩