বড়লেখায় নতুন ঘরে উঠলেন মুক্তিযোদ্ধার কন্যা লায়লা

এ.জে লাভলু, বড়লেখা


জুন ২৪, ২০২০
১১:২৯ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ২৪, ২০২০
১১:২৯ অপরাহ্ন



বড়লেখায় নতুন ঘরে উঠলেন মুক্তিযোদ্ধার কন্যা লায়লা

পুরোনো ভিটায় নতুন ঘর হবে। সেই ঘরে আবারও পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করতে পারবেন। এটি ছিল তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো। অবশ্য তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। পুরোনো ভিটেতে নতুন ঘর উঠেছে। সেই ঘরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি।   

বলছিলাম মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা আয়াজ আলীর মেয়ে লায়লা বেগমের কথা। সম্প্রতি প্রশাসন তাদের কাছে নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর করেছে। নতুন ঘরে তিনি পুত্র-পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনিসহ সবাইকে নিয়ে উঠেছেন। 

সরেজমিন লায়লার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। নতুন ঘর পেয়ে কেমন লাগছে জানতে চাইলে লায়লা বলেন, ‘ঘর ভাঙার পর চিন্তায় পড়ে যাই। অসহায় হুরুতাইন (বাচ্চা) লইয়া এ ঘরে ও ঘরে রইছি। কি কষ্ট বুঝাইতাম পারতাম নায়। ঘুম লাগছে না। শরীরের অবস্থা নাই। পেটে ভাত দিতাম পাররাম না। ঘর বানাইতাম কিলা। নতুন ঘর অইব বিশ্বাস করছি না। সরকারের সবার লাগি দোয়া করিয়ার। ঘর পাইয়া মনে অনেক শান্তি লাগের। আগে বৃষ্টির সময় জেগে থাকতাম রাইত। ঘুমাইতে পারতাম না। এখন আর ঘুমের কষ্ট অইতনায়।’  

বড়লেখা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ জুন দুপুরের দিকে ঝড়ে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর গ্রামে ট্রান্সফরমারসহ বিদ্যুতের একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে লায়লা বেগমের বসতঘর দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান ওই বসতঘরের বাসিন্দারা। ঘর ভাঙার খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। খবরটি স্থানীয় সাংসদ ও পরিবেশ মন্ত্রী এবং ইউএনওর দৃষ্টিগোচর হয়। পরদিন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের নির্দেশে ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি ঘর হারানো অসহায় পরিবারটিকে তাৎক্ষণিক খাদ্য সহায়তা হিসেবে  ২০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি পেঁয়াজ এবং ১ কেজি তেল এবং ৫ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন। ইউএনও প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘরটি নতুন করে তৈরি করে দেওয়া হবে বলে পরিবারটিকে আশ্বস্ত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দু’সপ্তাহের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের “আশ্রয়ণ-২” প্রকল্পের আওতায় যার জমি আছে ঘর নাই-তার নিজ জমিতে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি থেকে সেমিপাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। এক লাখ টাকায় টিনের চাল ও বেড়া মেঝেসহ আধাপাকা ঘর, পাকা বারান্দা ও একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বড়লেখা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগেও নগদ টাকা এবং  খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লায়লা বেগমের ঘর ভেঙে পড়ায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এসময় ঘর হারানো অসহায় পরিবারটিকে তাৎক্ষণিক খাদ্য সহায়তা এবং ৫ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করি। তাদের পুরো ঘর ভেঙেচুরে যায়। নতুন করে ঘর বানানোর সামর্থ্য ছিল না তাদের। তাই প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে নতুন একটি ঘরটি তৈরি করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প থেকে এটি নির্মান করে দেওয়া হয়েছে।’

এনপি-১৮