বড়লেখায় সংঘর্ষ : দুই মামলার আসামিদের খুঁজছে পুলিশ

বড়লেখা প্রতিনিধি


জুলাই ০৫, ২০২০
০২:৫৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ০৫, ২০২০
০২:৫৫ পূর্বাহ্ন



বড়লেখায় সংঘর্ষ : দুই মামলার আসামিদের খুঁজছে পুলিশ

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পলিথিন আটকের জের ধরে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দায়ের করা দু'টি মামলার আসামিদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। মামলার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও প্রধান আসামি সাইদুলসহ ১৫ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। 

গতকাল শুক্রবার (৩ জুলাই) রাতে মামলার প্রধান আসামি সাইদুলসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। আজ শনিবারও (৪ জুলাই) তাদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার রাতে প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি বিশেষ টিম সিলেট কোতয়ালী থানা ও সোবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের সহায়তায় সিলেট নগরের গার্ডেন টাওয়ারের ২০৬৪ নম্বর ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। তবে এ সময় সাইদুল ইসলামকে বাসায় পাওয়া যায়নি। পরে মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হয়।

এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক আজ শনিবার রাতে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় দু'টি মামলা হয়েছে। মামলার পর পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলার পর থেকে প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামসহ অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। শুক্রবার রাতে মামলার প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সিলেটে তার বাসায় অভিযান চালায়। এ সময় তাকে পাওয়া যায়নি। সাইদুলসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (১ জুলাই) স্থানীয় প্রশাসন পৌর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে মজুদ করা প্রায় ৭০ মণ নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধার করে। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামের পারিবারিক মালিকানাধীন রেলওয়ে স্টেশন রোডস্থ শাহজালাল শপিং সিটি থেকেও পলিথিন উদ্ধার করে প্রশাসন। ওই ঘটনার পর থেকে আসামিরা শামীম আহমদকে (মামলার বাদী) সন্দেহ করছিলেন। তাদের ধারণা শামীম আহমদ পুলিশকে তথ্য দিয়ে পলিথিনগুলো ধরিয়ে দিয়েছেন। পরদিন বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সকালে শহরের উত্তর বাজার এলাকায় শামীম আহমদকে কুপিয়ে জখম করে রাস্তায় ফেলে যাওয়া হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শামীম আহমদের উপর হামলার খবর পেয়ে তার ভাই পৌর যুবলীগের সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ স্বজনরা ঘটনাস্থলে গেলে বেলা ১টার দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে জসিম উদ্দিনসহ প্রায় ১২ জন আহত হন। জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষের সময় পর পর তিন রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এছাড়া সংঘর্ষের খবরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ। তিনি থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত শামীম আহমদ বাদী হয়ে ১৮ জনের ও জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় পৃথক দু'টি মামলা করেন। দু'টি মামলাতেই শাহজালাল শপিং সিটির মালিক সাইদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার পর শুক্রবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।

 

এজে/আরআর-১২