রাজনগরে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আটক ৬

রাজনগর প্রতিনিধি


জুলাই ০৭, ২০২০
০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ০৭, ২০২০
০৩:৪০ পূর্বাহ্ন



রাজনগরে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আটক ৬
আদালতে স্বীকারোক্তি

মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় এক অজ্ঞাত নারীকে গণধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে দুই নারীসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আটককৃতরা।

আজ সোমবার (৬ জুলাই) বেলা আড়াইটায় মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম (বার)।

আটককৃতরা হলেন- রাজনগর উপজেলার গয়াসপুর গ্রামের মৃত তরমুজ মিয়ার পুত্র জমশেদ মিয়া (৫২), উপজেলার চাঁনভাগ গ্রামের হোসেন খাঁর পুত্র বাদশা খাঁ (৩২), সৈয়দনগরের (ভাঙ্গারহাট) ইলাছ মিয়ার পুত্র শিপন মিয়া (৩০), চাঁনভাগ (টিলাগাঁও) গ্রামের মজিদ মিয়ার স্ত্রী এনা বেগম গোলাপী (৩৫), একই গ্রামের মনির মিয়ার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (২৭) ও সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার রনিখাই গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের স্ত্রী সালমা বেগম (২৫)। এ ঘটনায় পলাতক রয়েছেন বড়দল গ্রামের মৃত শেখ আবুল কালাম আজাদের পুত্র শেখ হুমায়ুন আহমদ (২৫)।

পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ পিপিএম (বার) প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত ১২ জুন সকালে রাজনগর উপজেলার ২ নম্বর উত্তরভাগ ইউনিয়নের চাঁনভাগ দক্ষিণ টিলা গ্রামে মুকুল মিয়ার আকাশী বাগানের একটি গাছ থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে আলামত জব্দ করে এবং পরে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে গণধর্ষণ ও হত্যার আলামত পায়। পরে দায়ীদের ধরতে মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমান নেতৃত্বে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম, পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম, এসআই বিনয় ভূষন, এসআই কালাম ও এসআই অজিত কুমার তালুকদারসহ অন্যান্যদের নিয়ে গঠিত তদন্ত টিম ব্যাপক তদন্তে নামে। একপর্যায়ে আসামি জামশেদ মিয়াকে আটক করে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ওই টিম। দীর্ঘ কৌশলী জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামি জমশেদ মিয়া স্বীকার করেন ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। জমসেদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরে অন্য আসামিদেরও আটক করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, খুন হওয়া অজ্ঞাত নারী একজন যৌনকর্মী ছিলেন। আসামি সালমা বেগমকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান অজ্ঞাতনামা ওই নারীর ছদ্মনাম সুমি বেগম। তবে তার কোনো ঠিকানা তিনি জানেন না। জনৈক রুকশানা বেগম 'সুমী বেগমকে' সালমার নিকট পাঠিয়েছিলেন। আসামিরা সালমা বেগমের কাছ থেকে 'সুমি বেগমকে' দুই হাজার টাকা চুক্তিতে এক রাতের জন্য এনেছিল। তাকে প্রথম রাতে আসামিরা এনা বেগম ওরফে গোলাপীর বাড়িতে রেখেছিল। দ্বিতীয় দিন সঙ্গ না দেওয়ায় তাকে তারা খুন করে গাছে ঝুলিয়ে রাখে। তবে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের কাছ থেকে ওই অজ্ঞাত নারীর পরিচয় এখনও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

প্রেস বিফ্রিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ারুল ইসলাম।

 

এফএইচ/আরআর-১৬