গোয়াইনঘাটে বন্যার অবনতি, পর্যটক আগমনে নিষেধাজ্ঞা

মিনহাজ মির্জা, গোয়াইনঘাট


সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
১০:৩৩ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
১০:৩৭ অপরাহ্ন



গোয়াইনঘাটে বন্যার অবনতি, পর্যটক আগমনে নিষেধাজ্ঞা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে সিলেটের গোয়াইনঘাটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত কয়েকদিন থেকে টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় আবারও ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ। অপরদিকে, সড়কপথে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। কয়েকদিন টানা বর্ষণ হওয়ায় ঢলের পানি বেড়ে গোয়াইনঘাটের সিংহভাগ অঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে বিভিন্ন সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। যার কারণে সিলেট জেলা শহরের সঙ্গে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এদিকে অসময়ের বন্যার কারণে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র জাফলং, বিছনাকান্দি, পান্তুমাই ও রাতারগুল এলাকায় পর্যটক আগমন নিরুৎসাহিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জাফলং এলাকার ডাউকি এবং সারি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে উপজেলার পূর্ব জাফলং, আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, লেঙ্গুড়া, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও ও পশ্চিম জাফলং ইউনিনের শতাধিক গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। যার কারণে উপজেলা সদরের সঙ্গে জেলা শহরে যাতায়াতের দু'টি সড়ক সারী-গোয়াইনঘাট ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় যাতায়াতের প্রধান দুই সড়কের কিছু অংশে পানি উঠে। পানি বাড়তে থাকায় গতকাল শুক্রবার থেকে এসব সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, টানা কয়েকদিন প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে জাফলংয়ের পিয়াইন নদী ও সারি নদী দিয়ে সীমান্তের ওপার থেকে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হয়। শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলার প্রধান এই দুই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে উপজেলার সিংহভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। তলিয়ে যায় কৃষকের সহস্রাধিক হেক্টর বোনা আমন ধানের ক্ষেত।

বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব জানান, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পুরো উপজেলার অবশিষ্ট অংশ বন্যাকবলিত হয়ে পড়বে। পানি উঠে সড়কের যেসব স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে সেখানে নৌকাযোগে মানুষ যাতায়াত করছেন। দুর্গত এলাকার লোকজনের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সহয়তা প্রদানের লক্ষ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রশাসন তৎপর রয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলায় বন্যার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার সবক'টি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের আগমনকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আলী জানান, বৃহস্পতিবার থেকে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গোটা উপজেলায় সদ্য রোপিত আমন ধান ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় কৃষকের পাকা আউশ ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি না কমা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করা যাচ্ছে না।

আজ শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গোয়াইনঘাটের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছিল।

 

এমএম/আরআর-০৭