ব্লগার অনন্ত হত্যা, দুই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


অক্টোবর ০৭, ২০২০
০২:২৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৭, ২০২০
০২:২৫ পূর্বাহ্ন



ব্লগার অনন্ত হত্যা, দুই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ

কয়েক দফা পেছানোর পর সিলেটের বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ (৩২) হত্যা মামলায় দুই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) এক ইউপি সদস্যসহ দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁরা আসামি গ্রেপ্তার অভিযানের প্রত্যক্ষদর্শী। সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমিন বিপ্লবের আদালতে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সাক্ষ্য দেওয়া দুজন হলেন, কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফখর উদ্দিন ও পূর্ব পালজুর গ্রামের বাসিন্দা শফিক আহমদ। ২০১৫ সালের ২৮ আগস্ট ভোররাতে কানাইঘাটের পূর্ব পালজুর গ্রামে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আসামি গ্রেপ্তার অভিযানের প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষ্য দেন ফখর উদ্দিন ও শফিক আহমদ। সিআইডির ওই অভিযানে মামলার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেওয়া একমাত্র আসামি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহীকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। 

এর আগে গত বছরের ৭ মে সর্বশেষ সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছিল। এরপর সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকায় একাধিকবার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পেছানো হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন তারিখ ধার্য করা হয়। নতুন দুজনসহ এ পর্যন্ত মোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ১৪ জন। এ মামলায় মোট ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মনিরউদ্দিন বলেন, ‘অনন্ত হত্যা মামলায় আজ দুইজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এই দুজনের সাক্ষ্য গ্রহণের সময় এই মামলায় কারাবন্দি থাকা সাফিউর রহমান ওরফে ফারাবী ও আবুল খায়ের রশীদ আহমদকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ৩ নভেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত।’

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারের কলাপাড়া এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত বিজয় দাশ। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন অনন্ত। 

হত্যাকাÐের এক দিন পর অনন্তের বড় ভাই রতেœশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। 

মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে কানাইঘাটের আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭) ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) পলাতক। কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪) মৃত্যুবরণ করেছেন। আরেক আসামি সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)। তিনি বøগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলারও আসামি।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীরা জানান, গত বছরের ৭ মে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে বারবার পেছানো হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। দীর্ঘদিন সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলার পর স¤প্রতি মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। এই ট্রাইব্যুনালে গত ২৪ মার্চ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় ওই দিন সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। এরপর ৮ জুন মামলার পরবর্তী তারিখ ছিল। ওই তারিখেও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। সর্বশেষ ২২ সেপ্টেম্বর সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে আরেক দফায় সাক্ষ্য গ্রহণ পেছায়। 

এনপি/বিএ-২৭