নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ১৩, ২০২০
০৫:০২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ১৩, ২০২০
০৫:০৩ পূর্বাহ্ন
রায়হান হত্যার বিচার দাবিতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে নগরের আখালিয়ায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। সোমবার বেলা তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত বিক্ষোভ হয়। এলাকাবাসীর উদ্যোগে বিক্ষোভে নিহত রায়হানের মা সালমা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরাও একাত্ম হন। সড়ক অবরোধকালে ‘রায়হান হত্যার বিচার চাই’ ব্যানারসহ হাতে লেখা নানা রকম পোস্টার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করে মানববন্ধন হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সরব ছিলেন সিলেটবাসী। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তারা এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান কামরান। নেহারিপাড়া সমাজকল্যাণ সমিতির সদস্য আনাস চৌধুরী ও জয়নাল আহমেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন, নেহারিপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজবাউর রহমান, বৃহত্তর মদিনা মার্কেট ব্যবাসয়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহমদ, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জব্বার শাহী, নেহারিপাড়া সমাজকল্যাণ সংস্থার মো. মঈনুল ইসলাম, আবদুর রহমান, গোলাম রব্বানী, রাসেল আহমদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য নৃশংসভাবে নির্যাতন করে রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি পুলিশ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা ধরনের মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনকারীদের পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানে। মামলা দায়ের করা হলেও নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা না হলে কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনের এক পর্যায়ে রায়হানের মা সালমা বেগম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অংশ নেন। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে বসে অনেকটা আহাজারি করে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ছিনতাইকারী বা অপরাধী নয়। তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে বিনা দোষে রাতভর নির্যাতন করে হত্যা করেছে । পুলিশ তো মানুষের রক্ষক, কিন্তু সেই পুলিশই আজ ভক্ষক। আমার ছেলেকে হত্যা করে তা-ই প্রমাণ করেছে। টাকার জন্য পুলিশ আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় : ‘পুলিশি নির্যাতনে’ রায়হান আহমদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিলেটের নাগরিকরা। কেউ কেউ বলেন, ‘পুলিশ জনগণের বন্ধু হওয়ার কথা; কিন্তু সেই পুলিশের হাতেই সাধারণ জনগণের মৃত্যু হচ্ছে।’ কেউ লিখেছেন, ‘পুলিশ ফাঁড়িতে এমন ঘটনা ঘটলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়, ঘুষ না দেওয়ায় একজন যুববকে মেরে ফেলল পুলিশ?, যারা এই ঘৃণ্যতম ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে, যাতে আগামীতে আর কোনো রায়হানকে এভাবে প্রাণ হারাতে না হয়।’
বিএ-০৩