জৈন্তাপুর সীমান্তে বিএসএফ'র হাতে ৬ বাংলাদেশি 'আটক'

জৈন্তাপুর প্রতিনিধি


অক্টোবর ১৬, ২০২০
১২:১৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০২০
১২:১৬ পূর্বাহ্ন



জৈন্তাপুর সীমান্তে বিএসএফ'র হাতে ৬ বাংলাদেশি 'আটক'

সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ২৭টি গরু-মহিষ আটক করা হয়েছে। অপরদিকে উপজেলার লালাখাল সীমান্ত থেকে বিএসএফ ৬ বাংলাদেশিকে আটক করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিজিবি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জৈন্তাপুর উপজেলার ঘিলাতৈল ফুলবাড়ির ১২৮৭ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলার এলাকায় ভোর ৫টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে হরিপুর এলাকার চোরাকারবারীদের ১৪টি ভারতীয় মহিষ এবং সকাল ৮টায় অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় ১৩টি গরু ও ৭ বস্তা মটরশুটি আটক করেছেন ১৯ বিজিবির জৈন্তাপুর ক্যাম্পের জোয়ানরা। এর আগে গতকাল বুধবার (১৪ অক্টোবর) জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখাল বড়ঘাট এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে গরু-মহিষ আনতে যাওয়া কোয়াতরবস্তি এলাকার দুই বাংলাদেশিকে আটক করেছেন ভারতের কেলেরিয়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা। এ সময় আরও শতাধিক মানুষ দৌড়ে পালিয়ে যান বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা।

বিএসএফ'র হাতে আটককৃতরা হলেন- জৈন্তাপুর উপজেলার কামরাঙ্গী দক্ষিণ গ্রামের আব্দুস শুক্কুরের ছেলে বতাই মিয়া (৩০) এবং গৌরীপ্রকাশ খেড়িগোল গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে রুহুল মিয়া (২৮)। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় বিএসএফ আটকৃতদের লাটমবাই থানার মাধ্যমে জোয়াই হাজতে প্রেরণ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া হরিপুর ইউনিয়নের বালিপাড়া কুমারছটি গ্রামের নাজিম উদ্দিন (৩৫), ৪ নম্বর বাংলাবাজার এলাকার সুজন মিয়া ও কদমখাল এলাকার দুইজনকে ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ আটক করে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানান, সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা মটরশুটি, মটর ডাল ভারতে পাচার করছে চোরাকারবারি দলের সদস্যরা, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। মাঝে মধ্যে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি হাতেগোনা গরু-মহিষ এবং ভারতে পাচার করা কয়েক বস্তা মটরশুটি আটক করে 'আইওয়াশ' করে মাত্র।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) উপজেলার আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন ব্যক্তি চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। কিন্তু বৈঠকে বিজিবি ও পুলিশ উপস্থিতি থাকার পরেও চোরাচালানকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অবৈধভাবে সীমান্ত এলাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভারতের গরু, মহিষ ও অন্যান্য সামগ্রী বাংলাদেশে নিয়ে আসছে তারা।

বৃহস্পতিবার গরু-মহিষ আটকের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিজিবি'র জৈন্তাপুর ক্যাম্প কমান্ডার রফিক আহমদ। তবে বিজিবি'র হাতে ৬ বাংলাদেশি আটকের বিষয় সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

অপরদিকে লালাখাল বিজিবি'র ক্যাম্প কমান্ডার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে দুই বাংলাদেশি আটকের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আর কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, 'উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।'

বিজিবি'র ডিবির হাওর ক্যাম্প কমান্ডার বলেন, 'লোকমুখে শুনেছি দুইজন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতীয় পুলিশ আটক করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এলাকার কেউ আমাদের কিছু জানায়নি।'

মিনাটিলা বিজিবি ক্যাম্প ও শ্রীপুর ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, তাদের সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কিংবা ভারতীয় পুলিশের হাতে কেউ আটকের কোনো সংবাদ তারা জানেন না।

 

আরকে/আরআর-১১