অতিরিক্ত অর্থ আদায় : বিয়ানীবাজারে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি


অক্টোবর ১৬, ২০২০
১২:৫১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০২০
১২:৫১ পূর্বাহ্ন



অতিরিক্ত অর্থ আদায় : বিয়ানীবাজারে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

সিলেটের বিয়ানীবাজারের উপজেলার জলঢুপ উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বকেয়া বেতন আদায় ও মূল্যায়ন পরীক্ষার ফি নিতে শিক্ষার্থীদের চাপ প্রদানের অভিযোগে সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। পরে স্থানীয় অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা অবেরোধ তুলে নেয়। গত কয়েকদিন থেকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকালে শিক্ষার্থীরা বেতন প্রদান করলেও পরীক্ষা ফি মওকুফের জন্য প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিনের কাছে অনুরোধ জানাইয়। জবাবে তিনি পরীক্ষা ফি না দিলে মূল্যায়ন পরীক্ষার উত্তরপত্র জমা নেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এর ফলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ও পরে বিদ্যালয়ের সামনে বিয়ানীবাজার-বারইগ্রাম সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানাইয়, কয়েকদিন থেকে মূল্যায়ন পরীক্ষার উত্তরপত্র জমা নেওয়ার জন্য নিয়মিত আমাদের বিদ্যালয়ে আনা হচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপে শিক্ষকদের পাঠানো প্রশ্নপত্রের উত্তর আমাদের নিজস্ব কাগজে লিখে এনে জমা দিচ্ছি। তারপরও স্যাররা আমাদের কাছ থেকে ৫০ টাকা করে অতিরিক্ত পরীক্ষা ফি নিচ্ছেন। কেউ দিতে অপারগ হলে খাতা জমা রাখা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়ের একটি সুষ্ঠু সমাধান চাই।

হাফিজ আহমদ নামের এক অভিভাবক বলেন, 'আমি একটি দোকানে চাকরি করি। একমাত্র আমার উপার্জনে সংসার ও ছোট এক ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ চলে। বর্তমান অবস্থায় খেয়ে-পরে যেখানে বাঁচা দায়, এমতাবস্থায় প্রায় ২ হাজার টাকা বেতন ও ফি বাবদ জমা দিতে হচ্ছে। ভাই জানিয়েছে ফি না দিলে নাকি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। তাই বাধ্য হয়ে ধারদেনা করে ফি পরিশোধ করেছি।'

জলঢুপ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও লাউতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক জালাল উদ্দিন বলেন, 'মূল্যায়ন পরীক্ষার জন্য ফি নিচ্ছি। যারা পারবে তারা দেবে, না পারলে নিচ্ছি না। তবে সড়ক অবরোধের বিষয়ে কিছু জানি না।'

অবরোধের বিষয়টি প্রধান শিক্ষক অস্বীকার করলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত লাউতা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সামছুল হক বলেন, 'ছাত্রদের হট্টগোলের খবর শুনে এসেছি। আসার পর শুনলাম চাপ দিয়ে বেতন ও পরীক্ষা ফি আদায়ের প্রতিবাদে ছাত্ররা আন্দোলন করছে। তবে শিক্ষকরা তাদের দাবি মানার আশ্বাসে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।'

বিয়ানীবাজার উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌলুদুর রহমান বলেন, 'এখন পর্যন্ত বেতন নেওয়া বা মওকুফের বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে বেতন আদায়ের খবর পাচ্ছি।'

বাধ্য করে কারও কাছ থেকে বেতন আদায় করা যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষার বিষয়ে কোনো সিন্ধান্ত না হওয়ায় পরীক্ষা ফি আদায়ের প্রশ্নই আসে না।'

 

এসএ/আরআর-১৫