নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ১৯, ২০২০
০৬:১৩ অপরাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ১৯, ২০২০
০৬:১৩ অপরাহ্ন
সিলেট জেলায় ৫৮৪ পূজাণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে # ঢাকায় হবে না কুমারীপূজাও # হবে না প্রতিমা শোভাযাত্রা # মন্দির বন্ধ হয়ে যাবে রাত নয়টার মধ্যে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সারা দেশের মতো সিলেটেও এবার সীমিত পরিসরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবার জেলায় ৫৮৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। গতবারের চেয়ে এবার মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে ২৪টি। এছাড়া দুর্গাপূজায় কোনো উৎসব হবে না। রাত ৯টায় বন্ধ হয়ে যাবে মন্দির। অন্যবারের মতো প্রতিমা বিসর্জনে শোভাযাত্রাও হচ্ছে না।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলায় পারিবারিক ও সর্বজনীন মিলিয়ে ৫২০টি এবং সিলেট মহানগরে ৬৪ টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর সিলেট জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬০৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ হিসেবে এবার পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমেছে ২৪টি।
এদিকে, করোনাভাইরাস দুর্যোগে সবোর্চ্চ সতর্কতায় এবারের পূজা উদযাপন করা হবে। পূজা মণ্ডপে অতিরিক্ত আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে না। পূজা উদযাপন পরিষদ, সিলেট জেলা ও মহানগরের তথ্য মতে, চলতি বছর সিলেট জেলা ও মহানগরে ৫৪০টি মণ্ডপে সর্বজনীন পূজা উদযাপন করা হবে। আর ৪৪টি মণ্ডপে পারিবারিকভাবে পূজা উদযাপন করা হবে।
পরিষদের সূত্রমতে, সিলেট সদর উপজেলায় সর্বজনীন ও পারিবারিক মিলিয়ে ৫৭টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দক্ষিণ সুরমায় ২১টি, গোলাপগঞ্জে ৫৮টি, বালাগঞ্জে ২৯টি, কানাইঘাটে ৩৫টি, জৈন্তাপুরে ২২টি, বিশ্বনাথে ২৬টি, গোয়াইনঘাটে ৩৯টি, জকিগঞ্জে ৮৪টি, বিয়ানীবাজারে ৫১টি, কোম্পানীগঞ্জে ২৮টি, ফেঞ্জুগঞ্জে ৩৭টি এবং ওসমানীনগর উপজেলায় ৩৩টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, করোনাভাইরাস দুর্যোগে পূজা উদযাপনে আমরা সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করেছি। এই নীতিমালায় কিভাবে পূজা মণ্ডপে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা হবে সেই বিষয়ে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবছর আমরা দুর্গোৎসব না বলে বলছি দুর্গাপূজা। এজন্য মণ্ডপে অতিরিক্ত সাউন্ড, আলোকসজ্জা, লাইটিং না করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া মণ্ডপে আসা পূজারি, দর্শনার্থীসহ সবার জন্য বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান করতে বলা হচ্ছে। এর বাইরে আমরা রাত ৮টার পর মণ্ডপে আসতে পুণ্যার্থীদের নিরুৎসাহিত করছি।
এবারের শারদীয় দুর্গাপূজায় কোনো উৎসব হবে না। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাত্তি¡ক আচারের মাধ্যমে পূজার আয়োজন সীমাবদ্ধ রাখা হবে। ঢাকায় এবার কুমারীপূজাও হবে না। মন্দির বন্ধ হয়ে যাবে রাত নয়টার মধ্যে। হবে না বিজয়ার শোভাযাত্রা। কোভিড পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য বিশেষ প্রার্থনাও করা হবে।
গতকাল শনিবার ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা এ কথা জানান। অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার পর দেবীপক্ষের সূচনা হলেও এ বছর আশ্বিন মাস ‘মলমাস’ হওয়ায় বরাবরের মতো দেবীপক্ষে দুর্গাপূজা শুরু হয়নি। এর ১ মাস ৫ দিন পর হেমন্ত ঋতুর কার্তিকে অর্থাৎ আগামী ২২ অক্টোবর ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হবে।
সন্ধ্যার মধ্যেই আরতি সম্পন্ন করে দর্শনার্থীদের মন্দিরে আসতে নিরুৎসাহিত করা হবে। রাত নয়টার পর মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর কোনো দর্শনার্থীকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এর পাশাপাশি ভক্তরা যেন তাঁদের বাড়ি থেকে অঞ্জলি দিতে পারেন, সে জন্য সম্ভব হলে মন্দিরগুলোর তরফ থেকে ডিজিটাল ব্যবস্থা করা হবে।
সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমীতে প্রতিবার প্রয় ভক্তদের জন্য খিচুড়ির ব্যবস্থা থাকলেও এবার তা থাকছে না। প্রসাদ বিতরণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার কোনো মন্দিরে খিচুড়ি দেওয়া হবে না। এটা একেবারেই বাদ। তবে হাতে একটা ফল দেওয়া যেতে পারে।
মন্দিরে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা প্রবেশের ব্যবস্থা থাকবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে, মাস্ক ব্যবহার করে ভক্তরা অঞ্জলি দিতে পারবেন। বিজয়া দশমী হবে ২৬ অক্টোবর, তবে এবার বিজয়ার শোভাযাত্রা হবে না। মন্দিরগুলো তাদের নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করবে।
বিএ-১৪