পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় যাচ্ছে রায়হানের পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ০৯, ২০২০
০৩:২৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০৯, ২০২০
০৩:২৬ পূর্বাহ্ন



পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় যাচ্ছে রায়হানের পরিবার

বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ‘নির্যাতনে’ নিহত রায়হান আহমদের পরিবারের সদস্যরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় যাচ্ছেন। সুষ্ঠু বিচার ও প্রধান অভিযুক্ত আকবরসহ সকল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওত্তায় নিয়ে আসার দাবি নিয়ে তারা মন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করবেন।

এ বিষয়টি সিলেট মিররকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান। তিনি বলেন,‘রায়হানের চাচা ও বোনের জামাই সম্প্রতি দেশে এসেছেন। তারা প্রধান অভিযুক্ত বহিষ্কৃত এসআই আকবরসহ সকল অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা ও সুষ্ঠু বিচারের দাবি নিয়ে সরাসরি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সোমবার দেখা করতে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে স্থানীয় মুরুব্বি শওকত হোসেন ও আমি যাবো।’ রবিবার রাতে তারা ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন বলে জানান কাউন্সিলর কামরান।

বিচার বিভাগীয় তদন্ত বা পিবিআই থেকে র‌্যাবের কাছে তদন্ত দেওয়ার দাবি করবেন কি না এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সার্বিক বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা হবে।’ 

এর আগে গত ২০ অক্টোবর রায়হানের বাড়িতে গিয়ে সিলেট ১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, অভিযুক্ত পুলিশের এসআই আকবর বিদেশে পালিয়ে গেলেও তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমার বিশ্বাস আকবর এখনও দেশের বাইরে যায়নি। কারণ সীমান্তগুলোকে আমরা সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করেছি।

তবে ঘটনার প্রায় একমাস পার হয়ে গেলেও এখানো ধরা ছোঁয়ার বাইরে প্রধান অভিযুক্ত আকবর। পুলিশ থেকে পিবিআইর কাছে তদন্ত হস্তান্তরের পর এঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুন উর রশিদকে দুই দফায় আটদিন ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তবে তারা কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হননি। এছাড়া রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী সাইদুর শেখ নামের এক ব্যক্তিকে মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর শনিবার মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে কোতোয়ালি থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করে তাঁর পরিবার। পরদিন রবিবার সকালে তিনি মারা যান। রবিবার রাতে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখের তত্ত¡াবধানে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এর পর থেকে প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগে ২১ অক্টোবর ফাঁড়ির আরেক এসআই হাসানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এদিকে গত ১৩ অক্টোবর মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল বাতেন। পরে গত ১৫ অক্টোবর পিবিআই সিলেটের আখালিয়া নবাবি মসজিদ কবরস্থান থেকে রায়হানের মরদেহ উত্তোলন কাজ শেষ করে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যায় ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতেই রায়হানের মৃত্যু হয়। 

বিএ-১৩