নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ০৯, ২০২০
০৬:১৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ০৯, ২০২০
০৬:১৫ পূর্বাহ্ন
স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠান মালিকদের পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের বিভাগীয় পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন। কোনো কর্মকর্তার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হলে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার (৮ নভেম্বর) সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের বিভাগীয় পরিচালকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আশ্বাস দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব।
সভায় মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর জনগণ ও পরিবেশের স্বার্থে কাজ করে। আমরা কখনোই ব্যবসায়ীদের প্রতিপক্ষ নই। সরকারের অনুসৃত নীতিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হয়। সম্প্রতি যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জরিমানকে করা হয়েছে তা মোটেও উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয়; বরং সরকারের নীতিমালার পরিপালনের জন্য করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সকল ক্ষেত্রে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। ভবিষ্যতে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স পাবেন না এবং আরও বিভিন্ন রকম অসুবিধার সম্মুখীন হবেন। তাই সকলকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে। আবেদন করলে স্বল্পগত সময়ে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়া হবে। কারো মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সভায় ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া পেট্রোল পাম্প, সিএনজি ফিলিং স্টেশন, ইটভাটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অথচ বিগত প্রায় পঁচিশ-ত্রিশ বছর ধরে এসব প্রতিষ্ঠান চলছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মালিক এখনও জানেন না যে তার প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রয়োজন। এমনকি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অনেক বিভাগীয় শহরে এখন পর্যন্ত এরকম জরিমানা আরোপের ঘটনা ঘটেনি। সেখানে সিলেটের মতো ছোট একটি শহরে ব্যবসায়ীদেরকে এভাবে হয়রানি করা মোটেও সমীচীন নয়।’
সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, ‘করোনাকালে সারা পৃথিবীর ব্যবসা-বাণিজ্য যেখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে, অনেক দেশে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইনসেনটিভ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদেরকে জরিমানা করা অত্যন্ত অমানবিক।’ তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারীর কারণে প্রায় পাঁচ মাস দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে চালু হয়েছে। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্য এখনও আগের অবস্থায় ফিরেনি। তাছাড়া ব্যবসায়ীদেরকে ব্যবসা পরিচালনার জন্য সিটি করপোরেশন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অদিধপ্তর, ভ্যাট, আয়কর পরিবেশ অধিদপ্তরসহ প্রায় ১৩ ধরনের লাইসেন্স ও ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হয়। তার উপর ব্যবসায়ীদের এরকম হয়রানি করা মোটেও কাম্য নয়। তিনি বিষয়গুলি সুন্দরভাবে সুরাহা করা এবং পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণের লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদেরকে সময় দেওয়ার অনুরোধ জানান।
সভায় আরও বক্তব্য দেন, সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় শাখার সভাপতি মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ সিএনজি স্টেশন ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় শাখার সভাপতি আমিরুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট জেলা ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সভাপতি মো. দিলওয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ব্রিক্স মালিক সমিতির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল আহাদ, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের উপ-পরিচালক মো. শামসুজ্জামান সরকার, কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম, মো. সানোয়ার হোসেন, নজরুল ইসলাম, সিলেট চেম্বারের পরিচালক হুমায়ুন আহমদ, মো. নজরুল ইসলাম, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রæপের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মিন্টু, হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রæপের সভাপতি সুমাত নুরী চৌধুরী জুয়েল, সালাউদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট অরূপ শ্যাম বাপ্পী প্রমুখ।
বিএ-০৩