পলো বাওয়া উৎসবে মাতল জুড়ী

জুড়ী প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ০৬, ২০২০
০১:৫৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৬, ২০২০
০১:৫৮ পূর্বাহ্ন



পলো বাওয়া উৎসবে মাতল জুড়ী

মৌলভীবাজারের জুড়ী নদীতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার হারিয়ে যাওয়া এ ঐতিহ্যকে আবারও জাগ্রত করে তোলেছেন জুড়ীবাসী।

আজ শনিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার কন্টিনালা নদীতে শুরু হয় এ পলো বাওয়া উৎসব। বেলাগাঁও কন্টিনালা যুব ও সমাজকল্যাণ পরিষদের আয়োজনে পলো বাওয়া উৎসবের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম রেজা, জুড়ী মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিতাংশু শেখর দাস, জায়ফরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের দারা, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ইলিয়াছুর রহমান ময়না, বেলাগাঁও যুব ও সমাজকল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি জমির আলী প্রমুখ।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এসে অংশ নিয়ে পলো বাওয়া উৎসবকে মাতিয়ে তুলেছিলেন কয়েকশ মানুষ। পেশাদার, সৌখিন ও প্রবাসী মাছ শিকারীরা পলো নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন নদীতে। কন্টিনালা সেতু থেকে শুরু করে রাবার ড্যাম পর্যন্ত পলো দিয়ে মাছ ধরার মনোরম সে দৃশ্য উপভোগ করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি দূর-দূরান্তের দর্শনার্থীরা ভীড় জমান। উপস্থিত সকলের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, উৎসব ও আনন্দের কোনো কমতি ছিল না।

বেলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আক্তার হোসেন জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুমে জুড়ী নদীতে পানি কমতে শুরু করলে আশপাশের গ্রামবাসী পলো দিয়ে মাছ শিকারের দিন নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত দিনে শত শত লোক পলো, জাল, দড়িসহ মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে নদীতীরে হাজির হন। মাছ শিকারের উৎসব উপলক্ষে নদীর দুইপাড়ে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। 

একই গ্রামের সুরুজ মিয়া বলেন, 'দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। বাড়িতে এসে শখের বসে পলো বাইচে এলাম। পলো দিয়ে মাছ শিকারের আনন্দই আলাদা।'

শনিবার শিকারিদের অনেকেই বোয়াল, গজার, শোলসহ বিভিন্ন মাছ ধরেন। একজনের পলোতে মাছ ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার আনন্দে শরিক হন পাশের লোকজনও। মাছ শিকার উৎসবে পলো ছাড়াও ফার জাল, ছিটকি জাল, ঝাকি জাল, পেলুন ইত্যাদি দিয়েও মাছ শিকার করেন অনেকে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম বলেন, 'আজকাল নদী-নালা, খাল-বিল ভরে যাওয়ার কারণে এ উৎসব আর চোখে পড়ছে না। তারপরও পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসবটি আজ এক ব্যতিক্রমধর্মী মাত্রা পেয়েছে। এ ধরনের উৎসব ধরে রাখার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।'

 

এইচআর/আরআর-১০