মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ০৮, ২০২০
০৭:৪৪ অপরাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ০৮, ২০২০
১১:৪৯ অপরাহ্ন
আজ ৮ ডিসেম্বর। মৌলভীবাজারের জন্য একটি ঐতিহাসিক স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল মৌলভীবাজার। এই দিনে মৌলভীবাজার শহর তথা জেলার সর্বত্র স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ানো হয়।
মৌলভীবাজার শহরের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ছিল পাকবাহিনীর এই অঞ্চলের ব্রিগেড হেড কোয়ার্টার। যুদ্ধকালীন হানাদারবাহিনীর টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত বাংকারটি পিটিআইতে মাটিচাপা অবস্থায় আজও সাক্ষী হয়ে আছে।
তখনকার গণপরিষদের সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন মহকুমা হাকিমের কার্যালয় (বর্তমান জর্জ কোর্ট ভবনে) মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনসাধারণকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান আর বেঁচে নেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন আগে মারা গেছেন তিনি।
দিনটি স্মরণে প্রবীণ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, ‘এই এলাকায় জেড ফোর্সের সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন। ডিসেম্বরের শুরুতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় আক্রমণ আরও তীব্র করেন। ৪ ডিসেম্বর জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। ৫ ডিসেম্বর জেলার সর্বত্র শুরু হয় তীব্র আক্রমণ। জেলার চারদিক দিকে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে একের পর এক এলাকা শত্রুমুক্ত হতে থাকে। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর দুইদিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাজনগর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ও মুন্সীবাজার এলাকা শত্রুমুক্ত করে মৌলভীবাজার শহর অভিমুখে আসার জন্য অভিযান শুরু করেন। ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর মিত্র ও মুক্তিবাহিনী শহর ঘেরাও করে। এখানে মহকুমা হেডকোয়ার্টার থাকার কারণে পাকবাহিনীর বিগ্রেড হেডকোয়ার্টার ছিল। জেড ফোর্সের ১৭টি ইউনিটের মধ্যে ২টি ইউনিট কুলাউড়ার দিকে গেলেও বাকি ১৫টি ইউনিট নিয়ে তারা মৌলভীবাজার শহরে ঢোকার চেষ্টা শুরু করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তুমুল যুদ্ধ আর অনেক হতাহতের পর ৭ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের পুরো মহকুমা এলাকা থেকে পাকবাহিনীকে হটিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢোকেন। কিন্তু শহরের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী প্রচুর মাইনসহ অস্ত্র পুঁতে রাখায় সেগুলো অপসারণ ও নিষ্ক্রিয় করার পর ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারকে শপ্ত্রুমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়।’
এসএইচ/বিএন-০১/আরআর-০১