বড়লেখায় দণ্ডিত সেই সাঁওতাল যুবকরা পাচ্ছেন সরকারি ঘর

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
০২:৩৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
০২:৩৩ পূর্বাহ্ন



বড়লেখায় দণ্ডিত সেই সাঁওতাল যুবকরা পাচ্ছেন সরকারি ঘর

বড়লেখা প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অজ্ঞতাবশত বন্যপ্রাণী হত্যার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক ১ মাস সাজাভোগী হতদরিদ্র সেই দুই সাঁওতাল যুবককে সরকারি পাকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান। গৃহহীন এই দুই যুবকসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা ভাসমান জীবনযাপন করে আসছিলেন।

সোমবার (২১ ডিসেম্বর) তাদের বরাদ্দ দেওয়া সরকারি ঘরের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান ও সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। এ সময় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন ও ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি পাকা ঘর নির্মাণে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিওসি কেছরিগুল এলাকার সাঁওতাল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর হতদরিদ্র সুবল ভোমিজ সিংহ (২৫) ও জগ সাঁওতালসহ (২৫) ৯ জন সাঁওতাল যুবক গত ১৪ নভেম্বর আনন্দ-উন্মাদনায় মাধবকুণ্ড ইকোপার্ক এলাকা থেকে একটি শজারু শিকার করেন। তখন স্থানীয় বনপ্রহরী তাদেরকে আটক করে। রাতে ইউএনও মো. শামীম আল ইমরান ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে সুবল ভোমিজ সিংহ ও জগ সাঁওতালকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অপর ৭ জনকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৭০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। দণ্ডিত দুই সাঁওতাল যুবকের সাজার মেয়াদ গত ১৪ নভেম্বর শেষ হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন জানান, এই সাঁওতাল ছেলেরা কালিপূজা উপলক্ষে একটি শজারু শিকার করেছিল। বন্যপ্রাণী শিকার করা যে দণ্ডনীয় অপরাধ তা তারা জানত না। আটককৃতরা অত্যন্ত নিরীহ, হতদরিদ্র ও ভদ্র প্রকৃতির। ইচ্ছে করলে পালিয়ে যেতে পারত। কিন্তু তা না করে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত একজন বনপ্রহরীর হেফাজতে থেকেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতও আইনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাশীলতার প্রশংসা করেছেন। একমাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই সাঁওতাল যুবকের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। অন্যের বাড়িতে কোনোমতে থাকার বিষয়টি জেনে ইউএনও তাদের দুইজনকে দুইটি সরকারি ঘর বরাদ্দ দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম আল ইমরান জানান, অসচেতনতা ও অজ্ঞতার কারণেই তারা শজারুটি শিকার করেছে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, সাজাপ্রাপ্ত ৯ সাঁওতাল যুবকের মধ্যে দুইজন অত্যন্ত দরিদ্র। বাবা-মাসহ তারা অন্যের বাড়িতে থাকে। গৃহহীন হওয়ায় তাদেরকে দু'টি পাকা ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি।

 

এজে/আরআর-১৩