সিলেট মিরর ডেস্ক
ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
১০:০৭ অপরাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
১০:০৭ অপরাহ্ন
এক দিকে কোভিড-১৯ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত এক বৈশিষ্ট্য থেকে অন্য বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তিত হচ্ছে করোনাভাইরাস। ফলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য টিকাগুলো কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ব্রিটেনে শনাক্ত হওয়া করোনারভাইরাসের নতুন ধরন। এরইমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায়ও করোনার নতুন আরেকটি ধরন নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনের নাম— ‘৫০১ভি২’।
ব্রিটেনে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন ধরন নিয়ে আতঙ্কের কারণে বরিস জনসনের দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে রেখেছে বহু দেশ। বলা যায়, ইউরোপে প্রায় ‘একঘরে’ ব্রিটেন। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি থেকে বুলগেরিয়া, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে অনেক দেশই। পরিস্থিতি সামলাতে ক্রমশই কড়াকড়ি বাড়াচ্ছে ব্রিটেন। দেশটিতে চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন চলছে। এ বছর বড়দিনের উৎসব ও নতুন বছর উদযাপনের উৎসবের পুরো সময়েই নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে বলে জানিয়েছে সরকার।
জনসন প্রশাসনের সন্দেহ, করোনার নতুন ধরনটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে ছড়িয়ে থাকতে পারে। কারণ আফ্রিকার ওই দেশটিতেও করোনার রহস্যজনক একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। যার সঙ্গে ‘ব্রিটেনে সাম্প্রতিক সময়ে শনাক্ত ভাইরাসের মিল রয়েছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে ফিরে আসা এক ব্যক্তির শরীরে বৃহস্পতিবারও করোনার ওই নতুন ধরন শনাক্ত হয়েছে। এরই সূত্র ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে প্রবেশে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। সেই সঙ্গে গত দু’সপ্তাহের মধ্যে কেউ যদি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে ফিরে থাকেন বা এমন কারও সংস্পর্শে এসে থাকেন, তা হলে অবিলম্বে তাকে কোয়রান্টিনে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন ধরনটিকে ‘৫০১.ভি২’ নাম দিয়েছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের দাবি, একাধিক মিউটেশন ঘটে এটি এখন ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। তাছাড়া এটা কমবয়সীদের শরীরে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি টিকার কার্যকারিতায়ও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা গবেষকদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপ, কোয়াজুলু-নাটাল এবং ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশে প্রথম ধরা পড়ে করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরনটি। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রথম সংক্রমণের খবর আসে নেলসন ম্যান্ডেলা বে থেকে। ভাইরাসের এই প্রকারভেদে অন্তত তিনটি পরিবর্তনের কথা জানা গেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রিচার্ড লেসেলস জানিয়েছেন, বর্তমানে যে ভ্যাকসিনগুলো তৈরি হয়েছে, সেগুলো কতটা কাজ দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এমনকি এক বার করোনা হয়ে যাওয়া ব্যক্তিও এই ভাইরাসের নতুন এই ধরনে নতুন করে আক্রান্ত হতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি।
যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার এই নতুন ধরনকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তার কৌশল আলোচনা করার জন্য বুধবার বৈঠক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রগুলো।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। দেশটিতে মারা গেছে প্রায় ২৬ হাজার মানুষ।
সূত্র: আলজাজিরা ও আনন্দবাজার
এএফ/০৩