কুলাউড়া প্রতিনিধি
জানুয়ারি ০৪, ২০২১
১২:৩৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০৪, ২০২১
০৪:০২ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে সরকারি টাকায় টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ করছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মনু মিয়া। দু’টি রাস্তা নির্মাণে টিলা কাটা এবং রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন এ বিষয়ে প্রথমে মৌখিকভাবে ও পরে লিখিত আকারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন থেকে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে টিআর প্রকল্পে উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তা নির্মাণে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। একই অর্থবছরে ইউনিয়নের কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে কালা মিয়ার বাড়ি থেকে অর্জুণকুর্মি রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দু’টি কাজের দাযিত্ব পান জয়চন্ডী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনু মিয়া। কাজ বাস্তবায়নের শুরু থেকে স্থানীয় লোকজন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেন। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন প্রথমে মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেন। পরে তারা লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তা নির্মাণে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকার মধ্যে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার কাজ হয়েছে। এছাড়া কালা মিয়ার বাড়ি থেকে অর্জুণকুর্মি রাস্তায় ২ লাখ টাকার মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার কাজ হয়েছে। এদিকে দু’টি রাস্তার কাজ বাস্তবায়নে ইউপি সদস্য একাধিক টিলা কেটেছেন। রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তায় মলাঙ্গি টিলায় প্রায় ১ হাজার ফুট টিলা ১০ থেকে ১২ ফুট গভীর করে কাটা হয়। যেভাবে খাড়া করে টিলা কাটা হয়েছে, তাতে আগামী বর্ষা মৌসুমে টিলা রাস্তায় ধসে পড়বে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। টিলা কাটার মাটি রাতের আঁধারে বিক্রি করা হয়েছে। ইউনিয়নের দিলদারপুর গ্রামের এলাইচ মিয়ার মাটি কাটার এসকেভেটর ও ট্রাক্টর মাটি কাটা এবং বিক্রিতে পরিবহন কাজে ব্যবহৃত হয়। রাস্তা নির্মাণে যেটুকু টিলা কাটা হয়েছে সেই অংশ ছাড়া বাকি অংশ কোদাল দিয়ে পরিষ্কার করে কাজ শেষ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মনু মিয়া বলেন, 'টিলা না কাটলে রাস্তা হবে না। রাস্তার ক্ষেত্রে পাহাড় কাটার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। পাহাড়ে যেতে রাস্তা লাগে। এটাকে পাহাড় কাটা বলে না। কেউ অভিযোগ দিতেই পারে। তবে রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তার কাজের প্রজেক্টের চেয়ারম্যান আমি নই। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন কমরু প্রজেক্টের চেয়ারম্যান।'
কুলাউড়া উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী জানান, তিনি নিজে দেখেছেন রঙ্গীরকুল-পাঁচপীর জালাই রাস্তার কাজে অনিয়মের চিত্র। কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী জানান, অভিযোগ আছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেএইচ/আরআর-০২