সিলেট মিরর ডেস্ক
জানুয়ারি ০৭, ২০২১
০৮:০৬ অপরাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০৭, ২০২১
০৮:০৬ অপরাহ্ন
চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে জো বাইডেনকে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং কমলা হ্যারিসকে পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের শপথ নিতে আর কোনো বাধা নেই।
এ এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির অবরুদ্ধ ক্যাপিটল হিল বা পার্লামেন্টের ভেতরে দেশটির আইনপ্রণেতারা থাকলেও বাইরে চলছে কারফিউ। এমন এক শাসরুদ্ধকর অবস্থায় রাতভর ইলেকটোরাল কলেজ ভোট গণনা শেষে তা সত্যায়ন করে জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট ও কমলা হ্যারিসকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় মার্কিন নেতাদের এ অভূতপূর্ব রায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেন জো বাইডেন।
এর আগে পেনসিলভ্যানিয়া ও অ্যারিজোনার ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে রিপাবলিকান দলের কয়েক সিনেট সদস্যের আপত্তি ও ফলাফল বাতিলের আবেদন দীর্ঘ বিতর্ক ও ভোটাভুটি শেষে খারিজ হয়ে যায়।
পরে এক এক করে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজ ভোট সত্যায়ন করে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন অধিবেশনের সভাপতি ভাইস প্রেসিডন্ট মাইক পেন্স। এতে বাইডেন-হ্যারিসের প্রাপ্ত ৩০৬ ইলেকটোরাল ভোট এবং ট্রাম্প-পেন্সের ২৩২ ভোট অক্ষুণ্ণ থাকে।
নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ পরিচালনা করেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। হাউস ও সিনেট যৌথ অধিবেশন শুরু হয় স্থানীয় সময় বুধবার (৬ জানুয়ারি) বুধবার রাত ৮ টায় এবং তা শেষ হয় বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে।
যদিও রিপাবলিকান সিনেটরদের জর্জিয়া এবং উইসকনসিনের ভোট বাতিলের দাবি কোনো প্রকার ভোটাভুটি ছাড়াই খারিজ হয়ে যায়। আবার অনেক রিপাবলিকান সদস্য তাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।
এদিকে পার্লামেন্ট ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের সহিংস বিক্ষোভ ও হামলার পর এখনও উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনায় খোদ রিপাবলিকান দলের মিট রমনি, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ অনেকেই ট্রাম্পকে দায়ী করে তার বিচার দাবি করেন। নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতবৃন্দ।
আগামী ২০ জানুয়ারী নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথের আগমুহূর্ত পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই আরও প্রায় দু’সপ্তাহ ক্ষমতায় থাকছেন। ইলেকটোরাল কলেজ ভোট সত্যায়নের প্রক্রিয়া বানচাল করতে ব্যর্থ হয়ে ট্রাম্প নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আবারও কোনো চক্রান্ত করতে পারেন এমন আশঙ্কা করছেন অনেকে।
তাই আমেরিকার প্রথম দুই নারী মুসলিম কংগ্রেস সদস্যের একজন ইলহান ওমরসহ অনেক নেতা ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত হাউসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
যারা এ সংহিংস হামলার জন্য দায়ী তাদের শাস্তি পেতে হবে
স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি
কংগ্রেস ভবনে এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় হতবাক দেশটির হাউস জুডিশিয়ারি কমিটিও। তারা বলছে, পার্লামেন্ট ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের সহিংস বিক্ষোভ ও হামলার দায় ট্রাম্পেরই। ট্রাম্প টুইটারে একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্য পোস্ট করেছেন। এসব আচরণ প্রমাণ করে তিনি মানসিকভাবে স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। এ পরিস্থিতিতে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রতি ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করার আহ্বান জানিয়েছে হাউস জুডিশিয়ারি কমিটি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ৩টি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও ইন্সট্রগ্রাম। ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনার পরে ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগ করেছেন হোয়াইট হাউসের ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজারও। এমন অবস্থায় ট্রাম্পের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
