‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ করেছে সিলেট’

নিজস্ব প্রতিবেদক


জানুয়ারি ২৬, ২০২১
০২:১১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ২৬, ২০২১
০২:১১ পূর্বাহ্ন



‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক আরও সমৃদ্ধ করেছে সিলেট’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার জাভেদ প্যাটেল বলেছেন, ‘সিলেট অঞ্চল যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ককে সমৃদ্ধ করেছে। দিন দিন এই সৌহার্দ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

সোমবার সিলেট সফরকালে নগর ভবনে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন। একইদিন তিনি সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান এবং সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ পিপিএমের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎকার করেন।

ডেপুটি কমিশনার আরও বলেন, ‘সিলেট সফরে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই শহরের সঙ্গে অনেক ব্রিটিশ-বাংলাদেশির প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে। এখানে এসে সিলেটের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পেরেছি।’

তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি প্রসঙ্গে আশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ব্যতিক্রমী বন্ধন উদযাপনের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। ব্রিটিশ হাই কমিশননের প্রেস ও কমিউনিকেশন অফিসার নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাভেদ প্যাটেল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনে ডেপুটি হাই কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। গতকালের এই সফরে ডেপুটি হাই কমিশনার সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বকে দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আরও সমৃদ্ধ করার উপর জোর দেন।

মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সরকার, সিলেট সিটি করপোরেশন ও জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির যৌথ উদ্যোগে সিলেট নগরের দারিদ্র্য দূরীকরণ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন। এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির আওতায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ১১ হাজার মানুষ কোভিড-১৯ বিষয়ক সচেতনতা, পুষ্টি ও জীবিকার জন্য অনুদানসহ নগরের দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সহায়তা পাচ্ছেন। সিলেট সফরে মি. প্যাটেল ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্থানীয় অফিস পরিদর্শন করেন ও যুক্তরাজ্যের পরীক্ষা বিষয়ক প্রশাসনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত প্রায় ৬ লাখ মানুষ বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। এই জনসংখ্যার অধিকাংশ সিলেট বিভাগের। কমনওয়েলথ দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি সহযোগিতা পেয়ে থাকে। এককভাবে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানির অংশীদার। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন পাউন্ড পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করেছে। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রমবর্ধনশীল বিনিয়োগকারী যার পরিমাণ ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড।

রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলার আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম দাতা হিসেবে কক্সবাজারের প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণকে মানবিক সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় যুক্তরাজ্য ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে বলে জানায় ব্রিটিশ হাইকমিশন।

এদিকে, সিসিকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাক্ষাতে ব্রিটেন ও সিলেটের নানা বিষয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়। সোমবার বিকেল পৌনে ৪টায় নগর ভবনে গেলে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান সিসিক মেয়রসহ কর্মকর্তারা।

পরে সিসিক মেয়রের সঙ্গে আলোচনায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে তুলে ধরেন সিসিক মেয়র। এদিকে, বৃটেনের করোনা পরিস্থিতি বর্ণনা করেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার জাবেদ প্যাটেল। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনে উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির চলমান প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়।

পরে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার জাবেদ প্যাটেলকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, চা ও ক্রেস্ট প্রদান করেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, সচিব ফাহিমা ইয়াসমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা বিজন কুমার সিংহ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমন চন্দ্র দাস, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আ ন ম মনছুফ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান, এসেসর চন্দন দাশ, মেয়রের সহকারী একান্ত সচিব সুহেল আহমদ, জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল আলিম শাহ প্রমুখ।

আরসি-০৪