নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ২৯, ২০২১
০৭:০৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ২৯, ২০২১
০৭:২০ পূর্বাহ্ন
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত দেশের একমাত্র মিঠাপানির জলারবন রাতারগুল। পর্যটকদের কাছে পরিচিতি পাওয়ার পর সংরক্ষিত এই বিশেষ বন এক ধরনের পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে এই বনের অস্তিত্ব ও জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির সম্মুখীন।
এ বনে বৃক্ষ নিধন, বাধ দিয়ে পানি আটকানো, বিষ ঢেলে মাছ শিকার, পাখি শিকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এমনকি রাতারগুলে আগুন জ্বালিয়ে এখন বনভোজন পার্টি করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনা পরিস্থিতির কারণে রাতারগুলে পর্যটক যাওয়া বন্ধ হওয়ায় বনে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু, গত ডিসেম্বর থেকে শীতের মৌসুমে আবারও পর্যটকের চাপ বেড়েছে। এমনকি দলে দলে পর্যটকের আগমন ও বনের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে খাবার তৈরি ও পরিবেশনের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় পরিবেশকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বন বিভাগের বাণিজ্যিক মনোভাবকেই দায়ী করেছেন।
রাতারগুলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পরিবেশ আন্দোলন ভূমিসন্তান বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক আশরাফুল কবির এসব ঘটনার জন্য বন বিভাগকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাতারগুলের জলারবন নিয়ে গবেষণা হতে পারে। কিন্তু বন বিভাগের অপরিকল্পিত বাণিজ্যিক মনোভাবের কারণে আজ গুরুত্বপূর্ণ এই বন হুমকির মুখে।’
গত ২২ জানুয়ারি ‘ট্রেকার রাজ’ নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাণিজ্যিক উদ্দেশে ভ্রমণপিপাসীদের নিয়ে যান রাতারগুলে। এখানে সারাদিন ঘুরে বিকেলে বনের ভেতর আগুন জ্বালিয়ে পোড়া মাংস খাওয়ার আয়োজন করা হয়। রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় বনের গাছের ডালপালা ও মূর্তা বেত। সন্ধ্যায় ছিল গানের অনুষ্ঠান। এর একটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে পাতায় প্রকাশ করেছেন ওই ব্যক্তি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, ‘এর দায় সম্পূর্ণ বন বিভাগের। তাদের বাণিজ্যিক মনোভাবের কারণে বনটি ধ্বংস হচ্ছে। বনটি রীতিমতো বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।’
তবে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, বনের ভেতর সকল কিছুর তদারকি করে বন বিভাগ। জীববৈচিত্র্য ক্ষতি হওয়ার মতো কিছু হলে এবং আমাদেরকে জানালে পদক্ষেপ নেব।’
সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রবেশমূল্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সব মিলিয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা হচ্ছে। বনের ভেতরে আগুন জ্বালানোর বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’
আরসি-০৩