ওসমানীনগরে সরকারি খাল খননে দখলবাজদের বাধা

উজ্জ্বল ধর, ওসমানীনগর


ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২১
০১:৫৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২১
০১:৫৯ পূর্বাহ্ন



ওসমানীনগরে সরকারি খাল খননে দখলবাজদের বাধা

সিলেটের ওসমানীনগরে অবৈধ দখলবাজদের বাধার মুখে আটকে গেছে সরকারি খাল খননের কাজ। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে ধর্ণা দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে আসছে বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৫ শতাধিক পরিবারের পানিবন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পূর্ব তাজপুর ও সৈয়দপুর এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটির বিভিন্ন অংশ কতিপয় প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। এতে সামান্য বৃষ্টিতে এই এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ঘরের উঠান থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। টানা কয়েকবছর ধরে বর্ষা মৌসুমে এমন পরিস্থিতির হাত থেকে থেকে রক্ষা পেতে গতবছরের জুন মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির (কাবিখা) আওতায় প্রায় ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ২ কিলোমিটার খাল খনন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি সৈয়দপুরে কুশিয়ারা নদী থেকে খাল খননের কাজ শুরু হলে প্রায় ১ কিলোমিটার কাজ হওয়ার পর প্রভাবশালী দখলদারদের বাধার মুখে গত শনিবার থেকে খনন কাজ বন্ধ রয়েছে। চলতি মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প সম্পাদনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এতে আসন্ন বর্ষায় আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। 

এদিকে কাজ বন্ধ থাকার খবর পেয়ে ওসমানীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী, সরকারি তহশিলদার ও সার্ভেয়ার ঘটনাস্থলে গিয়ে সরকারি জায়গা চিহ্নিত করেছেন। এ সময় অবৈধ দখলদারদের খাল থেকে স্থাপনা উঠিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর কয়েকজন খাল থেকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিলেও এখনও খালের বেশ কিছু অংশ অবৈধ দখলে রয়ে গেছে। সার্ভে সঠিক হয়নি- এ দাবিতে তারা দখল বহাল রাখেন।

অভিযোগ রয়েছে, সরকারি খালের বেশ কিছু অংশ সৈয়দপুর গ্রামের আব্দুর রবের পরিবারের দখলে রয়েছে। প্রশাসন থেকে অনুরোধ করার পরও তারা স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছেন না। তবে এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন আব্দুর রবের ভাতিজা সোহেল আহমদ। তিনি বলেন, 'সরকারি খালের খুব সামান্য অংশ আমাদের সীমানা দেওয়ালের মধ্যে ছিল, যা সরকারি সার্ভেয়ার চিহ্নিত করার পর আমরা ইতোমধ্যে ক্লিয়ার করে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও বলা হচ্ছে আরও ভূমি আমাদের দখলে রয়েছে, যার কোনো ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেছি।'

প্রকল্প চেয়ারম্যান (স্থানীয় ইউপি সদস্যা) পারুল বেগম বলেন, 'চলতি মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না।'

সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম বারী সিলেট মিররকে বলেন, 'অবৈধ দখলদারদের কারণে বার বার খাল খনন কাজের গতি মন্থর হচ্ছে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে ইউএনও মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি দেখছেন।'

এ প্রসঙ্গে ওসমানীনগর উপজেলার নির্বাহী কমকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তার বলেন, 'উক্ত খালটি দীর্ঘদিন ধরে খনন হয়নি। তাই ভরাট হয়ে যাওয়ায় সরকারি ভূমি চিহ্নিতকরণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আবারও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। কাউকে সরকারি ভূমি দখলে রাখতে দেওয়া হবে না।

 

ইউডি/আরআর-০৭