কমলগঞ্জে বোরো ধানে চিটা, দিশেহারা কৃষক

সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ


এপ্রিল ১৮, ২০২১
০১:৪৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৮, ২০২১
০১:৪৬ পূর্বাহ্ন



কমলগঞ্জে বোরো ধানে চিটা, দিশেহারা কৃষক

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে ছোট ছোট ঢেউয়ের মতো বোরো ধানের সবুজ পাতা দোল খাচ্ছে। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা- চলতি বোরো মৌসুমে এমনটাই আশা ছিল কৃষকদের। কিন্তু কৃষকদের এই আশায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উষ্ণ আবহাওয়া। বোরো ধান নিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কয়েকশ বিঘা জমিতে রোপণকৃত বোরো ধান শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। ধানের থোর বের হওয়ার পর এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন বোরো চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, আবহাওয়ার তারতম্যজনিত কারণে গরম ঝড়ো হাওয়ায় ব্যাকটেরিয়াল পেনিক্যাল ব্লাইড নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টি হলে এ সমস্যা কেটে যাবে। 

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শস্য ভাণ্ডার খ্যাত কমলগঞ্জে চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় অংশ ব্রি ২৯ ও ব্রি-৪৮ জাতের ধান। আর বেশি আক্রান্ত হয়েছে এই দুই জাতের ধানের ক্ষেত। উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর, গুলেরহাওর, কমলগঞ্জ ইউনিয়নের বাদে উবাহাটা, বনগাঁও, আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া ও জাঙ্গালিয়াসহ উপজেলার কয়েকটি এলাকায় বোরো ধানে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, সম্প্রতি বৃষ্টিপাত ছাড়া গরম ঝড়ো বাতাস দেওয়ার পর থেকে বোরো ধানের শীষ বের হওয়ার পর ধানের দুধ শুকিয়ে চিটা হয়ে ধীরে ধীরে সাদা হয়ে যাচ্ছে।

কৃষক নুরুল ইসলাম, আব্দুল বারী ও সাজু মিয়াসহ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, ধানের শীষ থেকে থোর বের হওয়ার পর প্রথমে ধান কালো হয়ে লালচে রং ধারণ করে পরে সাদা হয়ে যাচ্ছে। ধানের দুধ শুকিয়ে চিটা ধারণ করছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে আবাদি জমির বিস্তীর্ণ এলাকায় চিটা ছড়িয়ে পড়ছে। এতে তারা ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা করছেন। উপজেলার অন্য এলাকার বোরো ক্ষেতেও একই অবস্থা। 

উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান, আবহাওয়ার তারতম্যজনিত কারণে দিনে গরম ও রাতে কুয়াশা পড়ায় এবং বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ব্যাকটেরিয়াল পেনিক্যাল ব্লাইড নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে ধানের আংশিক ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকদের কীটনাশক প্রয়োগসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, 'আবহাওয়ার তারতম্যজনিত কারণে বোরো ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। আমরা কৃষকদের জমিতে পানি রাখতে পরামর্শ দিয়েছি। বৃষ্টিপাত হলে এ সমস্যা থাকবে না।'

 

এসডি/আরআর-০৯