সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ০৭, ২০২১
১০:৫৭ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ০৭, ২০২১
১১:৫২ অপরাহ্ন
চীনের নভোযান লং মার্চ ফাইভ বির ধ্বংসাবশেষটি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এটি বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে আছড়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে ঠিক কখন ও পৃথিবীর কোন অংশে এটি আছড়ে পড়বে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
পৃথিবীর কক্ষপথে নিজেদের মহাকাশ স্টেশন স্থাপণের উদ্যোগ নিয়েছে চীন। সেই মহাকাশ স্টেশনের নামও ইতোমধ্যে ঠিক করা হয়েছে- তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশন।
সেই মহাকাশ স্টেশনের একটি মডিউল (অংশ) পরীক্ষামূলকভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করতে গত ২৮ এপ্রিল ওয়েনচ্যাং স্পেস সেন্টার থেকে ‘লংমার্চ ৫ বি’ নভোযানটি উৎক্ষেপণ করেছিল চীনের মহাকাশ সংস্থা।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত সংবাদমাধ্যম স্পেসনিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, নভোযানটি সফলভাবে মহাকাশ গবেষনা স্টেশনের মডিউলটিকে স্থাপনে সক্ষম হলেও নিজেকে আর গ্রাউন্ড স্টেশনের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি; ঘুরে চলেছে পৃথিবীর কক্ষপথে।
পাশাপাশি সেটির অভ্যন্তরের ১০০ ফুট লম্বা অভ্যন্তরীণ একটি অংশ মূল নভোযান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দিন কয়েকের মধ্যেই পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ঢুকে পড়তে চলেছে। রাডারে তা ধরাও পড়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নভোযানের ধবংসাবশেষটি এখন পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে এবং এটি বায়ুমণ্ডলের নিম্ন স্তরে ঢুকছে। যার মানে হল, এটি পৃথিবীর চারিদিকে বৃত্তাকারে ঘুরতে ঘুরতে নীচের দিকে নেমে আসছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আরো বলা হয়েছে, ধ্বংসাবশেষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে সেটিকে গোলা ছুড়ে নীচে নামিয়ে আনার কোন পরিকল্পনা আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের নেই।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি যে এটি এমন জায়গায় ধসে পড়বে যেখানে কারও কোন ক্ষতি হবে না। আশা করি সমুদ্র বা এমন কোথাও পড়বে।’
পাশাপাশি চীনকে কটাক্ষ করে অস্টিন বলেন, ‘ যেকোন পরিকল্পনা এবং অভিযান পরিচালনার সময় এই ধরণের বিষয়গুলি বিবেচনায় নেয়াটা বেশ জরুরি।’
নভোযানটির ধ্বংসাবশেষ জনবহুল অঞ্চলে বিধ্বস্ত হতে পারে বলে গত কয়েকদিন ধরে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে চীনের অন্যতম রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস।
দেশটির মহাকাশ বিশেষজ্ঞ সং ঝংপিংয়ের বরাত দিয়ে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চীনের স্পেস মনিটরিং নেটওয়ার্ক এ বিষয়ে নিবিড়ভাবে নজর রাখবে এবং কোথাও কোন ক্ষতি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আর্থ অবজারভেটরি সিঙ্গাপুরের জেসন স্কট হেরিন বিবিসিকে বলেন,‘মধ্যাকর্ষণ টানের ফলে এই ধ্বংসাবশেষ নীচের দিকে আরও ঘণ বায়ুমণ্ডলের দিকে নামতে থাকবে, এর ফলে মধ্যাকর্ষণ টান এবং নীচের দিকে নেমে আসার গতিবেগ আরও বাড়তে থাকবে।
একবার এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে, বস্তুটি একটি নির্দিষ্ট দিকে নীচের দিকে ধেয়ে আসতে থাকবে।’
তিনি আরো জানান, ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডল ক্রমেই ঘন হতে থাকায় রকেটের ধ্বংসাবশেষের বেশিরভাগ আগুনে পুড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে অংশগুলো পুড়বে না সেগুলোই পৃথিবীতে ভেঙে পড়বে।
২০২০ সালের মে মাসে চীনের একটি নভোযানে একই ঘটনা ঘটেছিল। সেবার পশ্চিম আফ্রিকার আইভরি কোস্টে গ্রামীন এলাকায় ওই নভোযানটির ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়েছিল। ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ১২ মিটার (৩৯ ফুট) দীর্ঘ একটি ধাতব পাইপও ছিল। তবে ওই ঘটনায় কেউ আহত হননি।
বি এন-০৯