কমলগঞ্জ ও নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
মে ২৪, ২০২১
০২:৪৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ২৪, ২০২১
০২:৪৭ পূর্বাহ্ন
সারা দেশের মতো সিলেট বিভাগেও চলছে প্রচণ্ড তাপদাহ। তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে জনজীবন। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে নানা রোগের প্রকোপ।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে খরতাপের প্রভাবের কারণে গরমে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। গরমের কারণে চা-বাগান, বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া, আমাশয় নিউমেনিয়াসহ নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার জনজীবন। দিনের খরতাপে আর রাতে ভ্যাপসা গরমে কমলগঞ্জের রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের চলাচল কমে গেছে। ভ্যাপসা গরমের প্রভাবে দিনমজুর থেকে শুরু করে প্রায় সব শ্রেণির মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিরুপ আবহাওয়ায় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া, ভাইরাস জ্বর, সর্দি, কাশিসহ পানিবাহিত নানা ভাইরাস রোগের প্রকোপ। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। আক্রান্তরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চেয়ে প্রাইভেট চিকিৎসকের শরনাপন্ন হচ্ছেন বেশি।
ভানুগাছ বাজারের পল্লী চিকিৎসক মো. নুরুল ইসলাম, শমসেরনগর বাজারের পল্লী চিকিৎসক শ্যামলেন্দু সেন শর্মা ও পিন্টু দেবনাথ বলেন, প্রতিদিন ৪ থেকে ৬ জন করে ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টের রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খবর নিয়ে জানা যায়, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাইপার টেনশনে আক্রান্ত শিশু, পুরুষ ও নারী মিলিয়ে ১০-১২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অন্যান্যরা চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অধিদপ্তরের অভজারভেশন অফিসার মাসুম আহমেদ জানান, গতকাল রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তাপমাত্রা ৩৭.২ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
কমলগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম ভূঁইয়া বলেন, অতিমাত্রার গরমে জন্ডিস, ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তবে সার্বক্ষনিক নজরদারী করছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
অন্যদিকে, গত দুইদিনের প্রচণ্ড গরমে কাতরাচ্ছেন হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার মানুষ। অতিষ্ট হয়ে পড়েছে জনজীবন। অসহনীয় তীব্র তাপদাহে দেখা দিয়েছে চরম অশান্তি। প্রকৃতির নির্মম তাপদাহে পুড়ছে সারা নবীগঞ্জ। এ উষ্ণায়ন প্রভাব ফেলেছে জনজীবনে। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকায় গরম দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে।
গত দুইদিনে নবীগঞ্জে গরমের প্রভাব মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়েছে। অব্যাহত তীব্র তাপদাহের কারণে জনজীবনে দেখা দিয়েছে চরম বিপর্যয়। এছাড়া প্রচণ্ড গরমে দেখা দিয়েছে নানা রকমের রোগবালাই। শিশু, যুবক ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন সর্দি, জ্বর, কাশি, ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে। ঘামতে ঘামতে রাস্তায় হাঁটছেন পথচারীরা।
যানজটে আটকা পড়া মানুষের অবস্থা ছিল আরও খারাপ। শ্রমজীবি মানুষের শরীর বেয়ে পড়ছে ঘাম। দিন বাড়ার সঙ্গে সূর্যের প্রখরতা ও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ নিজ প্রয়োজন ছাড়া কোথাও বের হচ্ছেন না। তবে খেটে খাওয়া মানুষ বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে রাস্তায় বের হতে বাধ্য হচ্ছেন।
কোথাও যেন একটু স্বস্তি নেই। অনেকেই একটু শান্তির জন্য বিভিন্ন ছায়াদানকারী গাছের তলায় বিশ্রাম নিয়েছেন। মানুষকে বিভিন্ন দোকানে দাঁড়িয়ে বা বসে ঠান্ডা পানীয় পান করতে দেখা গেছে। তাপদাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার বাসস্ট্যান্ড, জুয়েল ম্যানশনের সম্মুখ, রুদ্রগ্রাম সড়ক, রাজাবাদ পয়েন্ট, গন্ধ্যা পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থানে লেবুর শরবত ও ডাবের পানি ক্রয় করে পান করতে ভিড় জমাতে দেখা গেছে তৃষ্ণার্ত লোকজনকে।
এসডি/এএম/আরআর-১২