পর্যটনে নতুন সম্ভাবনা জুড়ীর 'কাশ্মীর টিলা'

সাইফুল্লাহ হাসান, মৌলভীবাজার


মে ৩০, ২০২১
১০:৩১ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ৩০, ২০২১
১০:৩১ অপরাহ্ন



পর্যটনে নতুন সম্ভাবনা জুড়ীর 'কাশ্মীর টিলা'

ঢেউয়ের মতো টিলা। পুরো জায়গাজুড়ে সবুজের হাতছানি। গাছ আর উঁচু টিলা মিলে হয়েছে সবুজের মহামিলন। এর চেয়ে বেশি আকর্ষণ জাগায় মন কাড়া টিলার উপর থেকে বিস্তৃত চারদিক। গত তিন বছর থেকে এই জায়গাটি পরিচিত 'কাশ্মীর টিলা' নামে। গত ঈদুল ফিতরের ছুটিতে শত শত দর্শনার্থী এসেছিলেন এই জায়গায়।

স্থানটি মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের শুকনা ছড়া এলাকায় অবস্থিত। পরিবেশবান্ধব ও প্রকৃতির নানা ছোঁয়ায় আবদ্ধ হওয়ায় স্থানটির দৃশ্য মনোমুগ্ধকর। ফলে ভ্রমণ, রমজানের ইফতার আয়োজনসহ ঈদ উদযাপনে প্রচুর পর্যটকের দেখা মিলেছে এখানে। এখানকার সৌন্দর্য যেন চোখ ফেরাতে বাধা দেয়, সবুজ ঘাসের দৃশ্য বার বার উপভোগে নিমগ্ন করে। এই সুন্দরকে যেন পাহারা দিচ্ছে পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা সেগুন গাছ। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা এই গাছগুলোর নেতৃত্ব বহুকাল আগের।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গত ৩ বছর আগে শাহীন আহমদ নামের এক পর্যটক ঘুরতে আসেন আমাদের এলাকায়। তিনি সবকিছু ঘুরে দেখার পর ওই টিলায় একবার যান। তার কিছুদিন পর এক সাময়িকীতে তার একটি লেখা ছাপা হয়। সেখানে তিনি এই টিলার সৌন্দর্য বলতে গিয়ে কাশ্মীর টিলা নামটি লিখেন। এরপর থেকে আমরা এই টিলাকে কাশ্মীর টিলা নামে প্রচার করতে থাকি। স্থানটির প্রতিটি দৃশ্য প্রশংসনীয়, পর্যটকদের কাছে একপ্রকার প্রশান্তি। এ রকম একটি জায়গায় জড়ো হতে পারা সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার।

খোরশেদ আলম আরও বলেন, জুড়ী উপজেলায় আমার দেখা দৃষ্টিনন্দন স্থানের মধ্যে অন্যতম স্থান কাশ্মীর টিলা। স্থানটি পরিবেশগত ভূমিকা পালনে অটল বিধায় এটি একটি পর্যটন স্পট হিসেবে গণ্য হতে পারে।

এখানে ঘুরতে আসা পর্যটক জিল্লু আহমেদ বলেন, স্থানটি অবশ্যই প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এক তৃপ্তির অধ্যায় হিসেবে গণ্য। চোখের কাছে থাকা এই স্থানটি অতীতে কারও নজরে ছিল না। এখন আমিসহ আমার আশপাশের এলাকার অনেকেই এখানে এসে সৌন্দর্য উপভোগ করি। প্রতিদিন শত শত পর্যটক মোটরসাইকেল নিয়ে এখানে বেড়াতে আসছেন।

তরুণ লেখক আবিদ হোসেন বলেন, জায়গাটি অনেক সুন্দর। টিলার উপরে উঠলে মনে হয় কাশ্মীরের কোথাও দাঁড়িয়ে আছি। এ বছর আমরা বন্ধু-বান্ধব মিলে একদিন ইফতার করেছি এই টিলার উপরে।

স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জুড়ীর সময়ের সম্পাদক আশরাফ আলী বলেন, জুড়ীতে অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে। এগুলো যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা যায়, তাহলে এখান থেকে সরকারও একটি রাজস্ব আয় করবে। কাশ্মীর টিলা গত ২/৩ বছর থেকে ব্যাপক পরিচিতি পাচ্ছে। এখানে এলে সবুজ টিলা, সবুজ গাছের সারিসহ পাখির কলকাকলীতে মন ভরে যায়। জায়গাটি দর্শনার্থীদের অনেক ভালো লাগছে। প্রতিদিন প্রচুর পর্যটকের সমাগম হচ্ছে এখানে।

যেভাবে যাবেন: মৌলভীবাজার থেকে জুড়ী বাজারে আসার পর উঠতে হবে কচুরগুল এলাকার গাড়িতে। পরে রাস্তায় নামতে হবে কালামাটি এলাকায় (সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার হবে)। সেখানে একটা চায়ের স্টল আছে, সেখানে কাশ্মীর টিলার কথা জিজ্ঞেস করলে মানুষ দেখিয়ে দেবে যাওয়ার রাস্তা। হেঁটে যেতে হবে সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের পথ। আর মোটরসাইকেলে অথবা সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করে নিয়ে এলে সরাসরি মূল জায়গা পর্যন্ত যাওয়া যাবে।


এসএইচ/আরআর-০১