বাঁশের খাঁটিতে বাধাগ্রস্ত নদীর পানি প্রবাহ ও মাছের প্রজনন

সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ


সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
০৭:৫৮ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
০৭:৫৮ অপরাহ্ন



বাঁশের খাঁটিতে বাধাগ্রস্ত নদীর পানি প্রবাহ ও মাছের প্রজনন

অবৈধ বাঁশের খাঁটমৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাঘাটা ও পলক নদীতে অবৈধভাবে বাঁশের খাঁটি (বেড়া) দিয়ে চলছে মাছ শিকার। ফলে দেশীয় প্রজাতির প্রাকৃতিক মাছের প্রজনন ও পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একটি অসাধু শিকারী চক্রের কবলে পড়ে মারা যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় মাছসহ জলজ প্রাণী। এতে নদী ও জলাশয়ে প্রাকৃতিক মাছের উপস্থিতি হ্রাস পাচ্ছে। তবে অবৈধ এসব মাছ শিকারীদের কখনও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উজানের ভারতীয় সীমান্তে পাহাড়ি এলাকা থেকে লাঘাটা নদীর উৎপত্তি হয়ে হাওরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মনু নদীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। এই নদীকে কেন্দ্র করে হাওর, বিল ও জলাশয়ে দেশীয় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষিতে সেচের বাড়তি মাত্রা যুক্ত হয়েছে। তবে একটি অসাধু শিকারী চক্র এসব নদীতে বাঁশের খাঁটি স্থাপন করেছে। লাঘাটা নদীর পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীরামপুর ও গোপীনগর এলাকায় দু’টি বাঁশের খাঁটি এবং পলক নদীতেও কয়েকটি বাঁশের খাঁটি বসানো হয়েছে। ফলে মাছের অবাধ গতি ও পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। খাঁচায় আটকে মাছ, ব্যাঙ, সাপ, কুচিয়াসহ নানা প্রজাতির জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। 

ধূপাটিলা গ্রামের কৃষক তাজু মিয়া, শেরওয়ান আলী, ফারুক মিয়া, কদর আলী, পতনঊষারের তোয়াবুর রহমান, মনু মিয়া ও মসুদ মিয়া বলেন, কয়েক বছর আগেও লাঘাটা নদী ও কেওলার হাওরে প্রচুর দেশীয় মাছের উপস্থিতি দেখা গেলেও এখন মাছের আকাল চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় তারা নদী সেচ ও বাঁশের খাঁটি স্থাপন করে মাছ শিকার করলেও এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।

তারা আরও বলেন, যদি স্বার্থান্বেষী মহলের অবৈধ পন্থায় মাছ শিকার বন্ধ করা যেত, তাহলে চলতি মৌসুমে মনু নদী ও লাঘাটা নদী মাছে ভরপুর হয়ে উঠত। এভাবে স্থানে স্থানে বাঁশের খাঁটি দেওয়ার কারণে মাছ উজানে উঠতে পারছে না।

পরিবেশকর্মী নুরুল মোহাইমীন বলেন, প্রতিবছর এই নদীগুলোর ওপর নানা অত্যাচারে মাছসহ জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে। ফলে নদী ভরাট ও সংকুচিত হয়ে পড়ছে। অথচ এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে কখনও কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

কমলগঞ্জ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, লাঘাটা ও পলক নদীতে অবৈধ বাঁশের খাঁটি দেওয়ার কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক নদী থেকে বাঁশের খাঁটি অপসারণ করা হবে।


এসডি/আরআর-০৬