নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ০১, ২০২১
০৫:৫০ অপরাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ০১, ২০২১
০৫:৫২ অপরাহ্ন
প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর অতিক্রম করল সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)। ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর যাত্রা করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। নগরের টিলাগড় প্রায় ৫০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা সিকৃবি এরই মধ্যে সাফল্যের পালক মেলে ধরেছে। কৃষিক্ষেত্রে শিক্ষাদান ও দক্ষ জনবল তৈরি করে দেখিয়েছে অনন্য সাফল্য।
বর্তমানে ৬টি অনুষদে ৪৭টি বিভাগে শিক্ষাদানের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় চলছে গবেষণা কার্যক্রম। যার স্বীকৃতিস্বরূপ বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারির সময়েও আন্তর্জাতিক স্কোপাস ইনডেক্স জার্নালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ১০০ এর অধিক গবেষণাপ্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
সিকৃবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ খসরু মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনায় হাওরে জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। বোরো ফসলনির্ভর হাওরাঞ্চলে একসময় শীতকালে মাঠের পর মাঠ পতিত থাকত। সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন হাওরের প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে সিকৃবি নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছে। চলছে মসলা জাতীয় ফসল নিয়ে গবেষণা।
প্রোটিন সমৃদ্ধ সিকৃবি শিম-১ ও সিকৃবি শিম-২ জাত দুইটি সিলেট অঞ্চলে বছরব্যাপী প্রোটিনের চাহিদা মেটাবে বলে আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্য জানার জন্য স্থাপন করা হয়েছে অটোমেটেড এগ্রোমেটিওরোলজিক্যাল স্টেশন। কৃষিক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও গবেষণা করে চমক দেখিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। হাওরে দারিদ্র্য বিমোচনে আগাম ধান চাষে সাফল্য, সিলেটের আবহাওয়া অনুযায়ী গ্রীষ্মকালীন শিম ও টমেটোর জাত উদ্ভাবন, আধুনিক কম্পিউটার ভিশন এর মাধ্যমে চায়ের ইমেজ প্রসেসিং প্রযুক্তির দ্বারা চায়ের চারটি গ্রেড নির্ভুলভাবে নির্ণয়ের পদ্ধতি উদ্ভাবন, স্বয়ংক্রিয় সেচ যন্ত্র উদ্ভাবন, উলম্ব ভাসমান খামারে (ভার্টিক্যাল ফ্লটিং বেড) একক স্থান হতে অধিক ফসল উৎপাদন করে ক্রম-হ্রাসমান ভূমির উপর চাপ কমানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন, মাছের মড়ক রোধে ভ্যাক্সিন উদ্ভাবনসহ নানাবিধ গবেষণার পাশাপাশি বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ রক্ষায় চলছে গবেষণা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম শোয়েব জানান, ‘এখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গবেষণার পাশাপাশি শিল্প সংস্কৃতিতে এগিয়ে রয়েছে এবং দেশ বিদেশে মেধার স্বাক্ষর রাখছেন।’
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বছরের একটি অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনার পাশাপাশি ৩০ বছরের একাডেমিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন অনুষদে অত্যাধুনিক গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। এ কারণে করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনাসহ অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। সবার সহযোগিতা পেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’
আরসি-১৬