সিলেটের দুই লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য গেল শিক্ষা অধিদপ্তরে

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ০২, ২০২১
০৫:০১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০২, ২০২১
০৫:০১ পূর্বাহ্ন



সিলেটের দুই লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য গেল শিক্ষা অধিদপ্তরে
শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক টিকা নিতে সিলেট জেলার ১ লাখ ৯২ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর তথ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এই তালিকা ধরেই খুব শীঘ্রই সিলেটে শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হবে। এ বিষয়ে সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৭ অক্টোবর এক নির্দেশনায় দেশের মাধ্যমিক স্কুলে অধ্যয়নরত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে তথ্য আহ্বান করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ২৭ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের তথ্য মাউশির ই-মেইলে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

নির্দেশনায় বলা হয়, টিকা দেওয়ার জন্য মাউশির আওতাধীন ঢাকা মহানগর ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের তথ্য ছক আকারে আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ই-মেইলে পাঠাতে হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ২৫ অক্টোবরের মধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ই-মেইল পাঠাবেন। আর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ২৭ অক্টোবরের মধ্যে মাউশির ই-মেইলে তথ্য পাঠাবেন।

সিলেট জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলা ও মহানগরের এক লাখ ৯২ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর বয়স ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ৬২ হাজার ৮৬৯ বিদ্যালয়ের এবং ২৯ হাজার ২৯০ জন মাদরাসার।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ এসএম আবদুল ওয়াদুদ সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে এক লাখ ৯২ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর তথ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। এখন যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হবে আমরা সেভাবে কাজ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি, বেসরকারি, এমপিওভুক্ত ও যাদের ইআইআইএন নম্বর রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করেছি। তথ্য প্রেরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। সরকারের নির্দেশনামতে আমরা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রেরণ করব।’

তিনি বলেন, ‘টিকাদান কবে শুরু এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে একটি সভা হবে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত হতে পারে। এছাড়া সিটি করপোরেশন থেকে আমাদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। আমরা তাদের কাছে তথ্য পাঠাব।’

এ বিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মÐল সিলেট মিররকে বলেন, ‘স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকাদানের বিষয়ে সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে একটি সভা হবে। সভায় শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সেই সভার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে কবে থেকে টিকাদান শুরু হবে। তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই সিলেটে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, প্রতি স্কুলে ২৫টি বুথ থাকবে। দিনে চার থেকে পাঁচ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে ২২টি জেলায় স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শিগগির এসব জেলায় টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে বলে ওই বুলেটিনে জানানো হয়েছে। টিকা নেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা ও জন্ম নিবন্ধন নম্বর আইসিটি বিভাগে পাঠাবে। আইসিটি বিভাগ সেটি যাচাই করে সুরক্ষা অ্যাপে দেবে। সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে স্কুল কর্তৃপক্ষ বা শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকেরা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। টিকা নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের টিকা কার্ড ও জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ফাইজারের ৭০ লাখ টিকা রয়েছে। যা দিয়ে ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হবে। আগামী নভেম্বরে আরও ৩৫ লাখ ডোজ ফাইজারের টিকা দেশে আসবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে।

এনএইচ/আরসি-০১