কমলগঞ্জ প্রতিনিধি
নভেম্বর ০৭, ২০২১
০১:১৭ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ০৭, ২০২১
০১:১৭ পূর্বাহ্ন
‘সংস্কৃতির বিকাশ, সাম্প্রদায়িকতার বিনাশ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরী নৃত্য দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ মণিপুরী সমাজ কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে আজ শনিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে এক র্যালি বের হয়।
র্যালির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিনহা, সাধারণ সম্পাদক কমলাকান্ত সিনহা, সাংগঠনিক সম্পাদক শান্তুমনি সিংহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে সিলেটে বেড়াতে এলে প্রথমে মণিপুরী হস্তশিল্প ও এর কারুকাজ দেখে তিনি অভি‚‚ত হন। পরে তিনি জানতে পারেন যে, এই হস্তশিল্পের কাপড় মণিপুরীদের তৈরী। তিনি সিলেটের মাছিমপুরে মণিপুরীপাড়ায় গিয়ে মণিপুরী রাখালনৃত্য দর্শন করে মুগ্ধ হয়ে রাসলীলা নৃত্য দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কবিগুরু মণিপুরী রাসনৃত্যের সাজসজ্জা, সাবলীল ছন্দ ও সৌন্দর্যে বিমোহিত হন এবং কলকাতার শান্তিনিকেতনে ছেলেমেয়েদের নৃত্য শেখাবার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।
পরবর্তীতে কলকাতার শান্তিনিকেতন প্রথমবারের মতো মণিপুরী নৃত্য ব্যবহার করে। পরে কবিগুরুর আমন্ত্রণে যোগ দেন মণিপুরী রাসনৃত্যের গুরু মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বালিগাঁও গ্রামের নীলেশ্বর মুখার্জ্জী। রবীন্দ্রসংগীতের গভীরতা ও কাব্যময়তার সঙ্গে মণিপুরী নৃত্যের সাবলীল গতি ও বিশুদ্ধ নান্দনিকতার মধ্যে বিশেষ সামঞ্জস্য থাকায় শান্তিনিকেতনে উচ্চাঙ্গ নৃত্যধারার মধ্যে মণিপুরী নৃত্য সর্বাপেক্ষা সমাদৃত হয়। এরপর বাংলাদেশে এবং সারা ভারতে মণিপুরী নৃত্যের প্রচার ও প্রসার ঘটে। কবিগুরুর ছোঁয়ায় মণিপুরী নৃত্য সারাবিশ্বে পরিচিত লাভ করে।
২০১৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সিলেট আগমনের শতবর্ষ পুর্তির অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মণিপুরী সমাজ কল্যাণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনন্দ মোহন সিনহা ৬ নভেম্বরকে মণিপুরী নৃত্য দিবস পালনের ঘোষণা দেন।
আগামীকাল রবিবার (৭ নভেম্বর) মণিপুরী নৃত্য দিবস উপলক্ষে মণিপুরী সমাজ কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে এক আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমলাকান্ত সিনহা।
এসডি/আরসি-০৭