কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি
নভেম্বর ১১, ২০২১
০৬:১৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১১, ২০২১
০৬:১৪ পূর্বাহ্ন
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার। উপজেলার পাঁচ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ২৬ জন, সংরক্ষিত সদস্য ৫৩ ও সাধারণ সদস্য হিসেবে ১৬৪ প্রার্থী প্রতিদ্বান্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৪৬। সব কয়টি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন অফিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সহিংসতার আশঙ্কা বাড়ছে। এ নিয়ে দলীয়, বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ করছেন। কেউ কেউ বিরোধী প্রার্থীর বিরুদ্ধে হামলা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ও জিডি করেছেন। ভোটাররা সহিংসতার আশঙ্কা করছেন। ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে রয়েছে অনেকের শঙ্কা।
পূর্ব ইসলামপুর ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন শ্রমিকদল নেতা আলমগীর আলম দৈনিক সিলেট মিরর-কে বলেন, পূর্ব ইসলামপুর ইউপিতে পাঁচটি কেন্দ্র খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় বহিরাগতদের দিয়ে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছেন অনেকজন প্রার্থী। তাদের অনুসারীরা বিভিন্নভাবে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
উত্তর রনিখাই ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ফয়জুর রহমান দৈনিক সিলেট মিরর-কে বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বি বিদ্রোহী প্রার্থী ফরিদ উদ্দিনের সমর্থকেরা আমার ও আমার নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে। নির্বাচনি প্রচারণায় বাধা দেওয়ার ঘটনায় আমিসহ দুই জন আহত হয়েছে। বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিনও বিভিন্নভাবে নির্বাচনে সমস্যা সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এখানের নয়টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়জুর রহমান।
দক্ষিণ রনিখাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদ বলেন, আমি আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হওয়ায় দলের বিদ্রোহি প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের ষড়যন্ত্র করছেন। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। ইউপির নয়টির কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলো কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ যে কোনো সময় যে কোনো কেন্দ্রে সহিংসতা ঘটতে পারে। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে তিনি নির্বাচন কমিশন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সর্বোচ্চ সহযোগিতা কামনা করেছেন।
কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টিতে নির্বাচন হচ্ছে সীমানা জটিলতার কারণে একটি নির্বাচন হচ্ছে না। ৫ ইউনিয়নেই সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। এক প্রার্থী অন্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ তুলছেন। যার ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। তবে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে বলে জেনেছি।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ভোটার ৭৪ হাজার ৪১২ জন। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ২৬ জন। এ ছাড়া সদস্য পদে ১৬৪ ও সংরক্ষিত আসনে ৫৩ জন নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কার বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশনার জিবুন্নাহার বেগম দৈনিক সিলেট মিরর-কে বলেন, দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ আমরা সকলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। নির্বাচনে যে প্রার্থী কিংবা তার সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এমকেএ/বিএ-০২