আজ থেকে সিলেটে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক


নভেম্বর ১৭, ২০২১
০৬:০৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ১৭, ২০২১
০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন



আজ থেকে সিলেটে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু
প্রথম দিন পাবে মহিলা ও এমসি কলেজের পরীক্ষার্থীরা

সিলেটে শিক্ষার্থীদের করোনা প্রতিষেদক টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে। সিলেটে প্রথম ধাপে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। প্রথম দিন সিলেট মহিলা কলেজ ও এমসি কলেজের পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। সিলেট এমসি ও মহিলা কলেজে স্থাপিত বুথে তাদের টিকা দেওয়া হবে।

জানা যায়, গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় পর গত আগস্টে খুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনার কাজ শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগে টিকা পেলেও স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ছিলেন টিকার বাইরে। তবে গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জে পরীক্ষামূলকভাবে ১২০ জন শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখার পর গত পহেলা নভেম্বরে ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হয়।

সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের মতো সিলেটেও শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে টিকাদান কেন্দ্র হতে হবে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। তবে সিলেটের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রুম। এ অবস্থায় সিলেট মহিলা কলেজ ও এমসি কলেজের দুটি কক্ষকে টিকাদান বুথ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। প্রথম ধাপে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীদের টিকা নিতে নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না। এইচএসসি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ও কলেজের দেওয়া তালিকার মাধ্যমেই টিকা দেওয়া হবে। আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।

সিলেট বিভাগীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের পরিচালক প্রফেসর মো. আব্দুল মান্নান খান সিলেট মিররকে বলেন, ‘আগামীকাল (বুধবার) সিলেটে শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। প্রথম ধাপে আমরা ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান করব। প্রথম দিন সিলেট মহিলা কলেজ ও এমসি কলেজের ৫০০ পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা এইচএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করেছেন তারাই এ টিকা আওতায় আসবে। তবে টিকা নিতে তাদের নিবন্ধন করার প্রয়োজন হবে না। রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ও কলেজের দেওয়ার তালিকার মাধ্যমেই তাদের এ টিকা দেওয়া হবে।’ সিলেট এমসি কলেজের অধ্যক্ষ মো. সালেহ আহমদ বলেছেন, ‘বুধবার থেকে আমাদের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হবে। কলেজে স্থাপিত বুথেই তাদের টিকা দেওয়া হবে।’

সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘প্রথম দিন ৫০০ শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। তবে পরবর্তীতে ১ হাজার শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এছাড়া এক দুই সপ্তাহ পর অন্যান্য স্থানে কেন্দ্র করেও পরীক্ষার্থীদের টিকাদানে পরিকল্পনা রয়েছে।’

এদিকে বুধবার থেকে সিলেটের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হলেও এখনি স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে না বলেই জানিয়েছে জেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্র। এইচএসসি পরীক্ষা সামনে থাকার কারণে আপাতত এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হবে। এর আগে গত ১৭ অক্টোবর এক নির্দেশনায় দেশের মাধ্যমিক স্কুলে অধ্যয়নরত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দিতে তথ্য চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ২৭ অক্টোবরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের তথ্য মাউশির ই-মেইলে পাঠাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত ৩১ অক্টোবর সিলেট জেলা ও মহানগরের ১ লাখ ৯২ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর তথ্য প্রেরণ করে জেলা শিক্ষা কার্যালয়। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর তথ্য পাঠানো হয়েছে। তবে এদের মধ্যে অনেকের জন্মনিবন্ধন নাম্বার নেই। এছাড়া অনেকের জন্মনিবন্ধন থাকলে সেটি ডিজিটাল নয়।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ এসএম আবদুল ওয়াদুদ সিলেট মিররকে বলেন, ‘প্রথমে পরিকল্পনা ছিল স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার। তবে এতে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে সামনে যেহেতু এইচএসসি পরীক্ষা তাই তাদের আগে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী ২৫ নভেম্বরের আগে তাদের টিকাদান শেষ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিলেট থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীরা তথ্য পাঠানো হয়েছে। তবে এদের মধ্যে অনেকের জন্মনিবন্ধন ছাড়া পাঠানো হয়েছে। অনেকের আবার ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন নেই। ফলে তাদের তালিকা করতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে আমরা যাদের তালিকা পাঠিয়েছি তাদের মধ্যে কতজনের জন্মনিবন্ধন আছে তার নতুন একটি তালিকা করা হবে। আর যাদের নেই সে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তা দ্রুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

এনএইচ/আরসি-০১