সিলেট মিরর ডেস্ক
নভেম্বর ১৮, ২০২১
০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ১৮, ২০২১
০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশে পণ্যটির দাম বাড়ানোর বিকল্প ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যে পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়, তা আরও বাড়ানো হলে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলবে।
সাম্প্রতিক বিদেশ সফর নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীর করা এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।
আজ বুধবার (১৭ নভেম্বর) গণভবনে করা এই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্নটা ছিল এমন, ‘আপনি যখন দেশের বাইরে ছিলেন, ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। পরে বাসের ভাড়া, লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। জিনিসপত্রের দামও অনেক বেড়ে গেছে। কৃষকের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এই বাড়তি দাম মিনিমাইজের বা প্রত্যাহার করার কোনো চিন্তা আছে কি না।’
জবাবে সরকারপ্রধান পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনাদের কি ধারণা আছে বছরে কত টাকা ভর্তুকি দিতে হয়? সাংবাদিকরা কি জানেন? উত্তরে ঐ সাংবাদিক বলেন, ‘২৩ হাজার কোটি টাকা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি ঠিক বলেছেন, ২৩ হাজার কোটি টাকা। তবে সেটা ডিজেলে। সব মিলিয়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে থাকি। কৃষককে ডিজেলে বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের তো তেল কিনে আনতে হয়…প্রশ্নটা হচ্ছে, ডিজেলের দাম যখন বেড়ে গেছে, প্রতিবেশী দেশেও বেড়ে গেছে। যত বেশি গ্যাপ থাকবে, পূরণ করব কী দিয়ে? আর কত টাকা ভর্তুকি আমরা দিতে পারব?’
বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ভর্তুকি দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একসময় বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। আমরা বিদ্যুৎ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছি, কিন্তু বিদ্যুতের জন্যও ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, উৎপাদন খরচ তুলতে পারছি না।’
গ্যাসে ভর্তুকির প্রসঙ্গও তোলেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘গ্যাসের সমস্যা সমাধানে এলএনজি আমদানি করছি। আমদানি করতে পাইপলাইন করতে, স্টেশন করতে কত টাকা গেছে? পরে কত খরচ হয়? ৬০ টাকা খরচ হয়, আমরা ৯ টাকায় পৌঁছে দিচ্ছি। ভর্তুকি দিচ্ছি। বাস্তবতা তো বুঝতে হবে।’
‘আপনারাই বলুন কত টাকা ভর্তুকি দেয়া যাবে?’ এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী আবার বলেন, ‘কাজেই আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, কত টাকা ভর্তুকি দেয়া যায়? তাহলে বাজেটের সব টাকা ভর্তুকিতেই দিয়ে দেব? এরপর আর কোনো উন্নয়ন হবে না দেশে, সেটাও দেখতে হবে। কারণ উন্নয়নের টাকা সব চলে যাবে ভর্তুকি দিতে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উচ্চ মূল্যে কিনে সর্বনিম্ন মূল্যে যে দিচ্ছি, সেখানে বিরাট অঙ্কের যে ভর্তুকি দিচ্ছি, এটার সামঞ্জস্য কীভাবে করব? এটা যদি আমাদের বুদ্ধিজীবীরা বা আপনারা সাংবাদিকরা একটু পরামর্শ দিন, তাহলে আপনারা যেভাবে বলবেন, সেভাবে করে দেব। আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু এই বিষয়টা আপনাদের বিবেচনা করতে হবে।’
আরসি-১৭