শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
০৯:১১ অপরাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ০৯, ২০২১
০৯:২১ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জে ইউপি সদস্য প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ায় একটি বাড়ির চার পাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দুটি পরিবারের লোকজনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন ওই ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী সহ তার লোকজন।
দীর্ঘদিন ধরে একমাত্র চলাচলের রাস্তা ও বাড়ির চার পাশে স্থানীয় প্রভাবশালী পরিবারের লোকজন জোরপূর্বক কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ায় ভুক্তভোগী দুইটি পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েন। বাড়িটি অবরুদ্ধ করে রাখায় ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন সহ তাদের গৃহপালিত গবাদি পশু ও চলাচল করতে পারে নি । এতে করে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় পরিবারের লোকজনদেরকে।
সরেজমিনে উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামের তৌফিক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা গিয়েছিল অভিযোগের সত্যতা, বাড়িটি একেবারেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সেই সাথে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন ছিল, এই দুটি পরিবারকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগও দিতে বাধা প্রদান করা হচ্ছিল। বাড়িতে অনেক গবাদি পশুগুলোও মানুষের মতো অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিল। পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে কোন ভাবেই বের হতে পারেন নি।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে তৌফিক মিয়া জানান, গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে কামাল হোসেন, সদ্য বিদায়ী তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে একজন ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী ছিলেন।
নির্বাচনে তিনি প্রতিপক্ষের কাছে পরাজিত হওয়ায় আমাদেরকে বলেন, আমরা তাঁকে ভোট দেই নি, তাই তার জায়গা দিয়ে আমরা চলাচল করতে পারবো না। এই কথা বলে গত রবিবার সকালে আমাদের বাড়ির চার পাশে তার লোকজনকে নিয়ে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে আমাদের বাড়িকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এই সময় গ্রামের অনেকেই বাধা প্রদান করলেও তিনি কোন কর্ণপাত করেননি।
আমরা ৪ দিন ধরে আমরা একঘরে অবস্থায় দিন কাটিয়েছি। এতে পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে পরিবারের কোন সদস্যই জরুরী কাজে বসত বাড়ী হতে বের হতে পারি নি। এমনকি আমার পরিবারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পাশপাশি পরিবারের সদস্যদের অন্যত্র হতে নলকূপের পানি সংগ্রহ করতে বাধা প্রদান করে আসতে থাকে।
আমার বাড়ীতে নলকূপ নেই, বাহির থেকে এনে আমি নলকূপের পানি পান করতে পারি নি । ২ দিন ডোবার পানি খেয়েছি।
অভিযুক্ত কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার জায়গায় আমি বেড়া দিয়েছি। জায়গাটি আমার, সে যে দিকে পারুক সে দিকে যাক। আমার কিছু যায় আসে না। আমি আমার জায়গায় রাস্তা বন্ধ করেছি। কার বাপের কি।
শিমুলবাঁক ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি গ্রামবাসীকে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছি। মানবিক বিবেচনায় রাস্তা হতে কাঁটাতারের বেড়া উঠিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষকে অনুরোধ করেছি। তারা শুনেন নি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. আনোয়ার উজজামান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বুধবার সকাল বেলা অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমি থানা পুলিশকে অবগত করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি।
পরে বুধবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলেই সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে কাটা তারের বেড়া কেটে ঐ পরিবারের লোকজনকে অবরুদ্ধ থেকে মুক্ত করা হয়।
শান্তিগঞ্জ থানার এসআই লুৎফুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এই বাড়িটির লোকজনকে মুক্ত করে দেন। এসময় স্থানীয় লোকজনকে দিয়ে কাটা তারের বেড়া কেটে চলাচলের রাস্তা করে দেয় পুলিশ।
এস টি/বি এন-০৩