সিলেট মিরর ডেস্ক
ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
০৩:৫১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ১৩, ২০২১
০৩:৫১ পূর্বাহ্ন
এক নারী মাদক কারবারির থেকে মাদক কেনার সময় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটককৃত এক মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আজ রবিবার (১২ ডিসেম্বর) ভোরে সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। মৃত বাবলু সরদার (৬৫) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা জুড়ন সরদারের ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন আলম চৌধুরী জানান, বাবলু সরদারকে গতকাল শনিবার সকালে তার গ্রামের বাড়ি দেবহাটা উপজেলার বসন্তপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তার হওয়া বাবুল সরদারকে গোয়েন্দা পুলিশের লকআপে রেখে দেওয়া হয়। রবিবার তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। রবিবার ভোর ৩টা থেকে ৫টার মধ্যে সে গলায় নিজের কোমরে ব্যবহৃত নাইলনের মোটা সুতা দিয়ে লকআপের গেটের গ্রীলের সাথে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।'
বাবলু সরদারের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় চারটি মাদকের মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাবলু সরদারের মেয়ে সুলতানা মুন্নি দাবি করে, তার দাদা জুড়ন সরদার মুক্তিযোদ্ধা। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মুন্নি খাতুন তাদের বাড়িতে ঢুকে তার বাবার ঘরে ফেনসিডিল রেখে নিকটে থাকা গোয়েন্দা পুলিশকে ইশারা করে। সঙ্গে সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মনির ও উপপরিদর্শক এনামুলসহ দুই কনস্টেবল তার বাবাকে ওই ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার দেখান। এ সময় ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ৩৫ হাজার টাকাও নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা।
মুন্নি আরো জানান, রবিবার দুপুরে তার মা (বাবলুর স্ত্রী) শাহানারাসহ তার তিন ভাইকে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে যান। সেখানে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইয়াছিন আলম চৌধুরী বাবুলকে ছেড়ে দেওয়ার নাম করে তাদের কাছ থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। এরপর তাদেরকে বলা হয় যে বাবলু সরদার আত্মহত্যা করেছেন।
মুন্নি বলেন, 'বাবা কোমরে কখনও সুতালি (রশি) ব্যবহার করতেন না। তাহলে তিনি কিভাবে লকআপের মধ্যে আত্মহত্যা করলেন?'
নিহত বাবুলের ছেলে আলমগীর হোসেন বলেন, 'বাবাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে।'
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি নিজের কোমরে থাকা নাইলনের সুতা পেঁচিয়ে লকআপের গেটের গ্রিলে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট আকতার হোসেন ও সদর হাসপতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. জয়ন্ত কুমার সরকারের উপস্থিতিতে লাশ নামিয়ে ময়নাতদন্ত করার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির কারণে পুলিশের সহকারি উপপরিদর্শক সোহেল শেখ ও কনস্টেবল শরিফুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আরসি-১৮