দিনভর উত্তেজনা, রাতে থমথমে পরিস্থিতি শেষে সিলেট চেম্বারের প্রেসিডিয়াম ঘোষণা ইসি’র

নিজস্ব প্রতিবেদক


ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
০৬:২৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
১০:১৭ পূর্বাহ্ন



দিনভর উত্তেজনা, রাতে থমথমে পরিস্থিতি শেষে সিলেট চেম্বারের প্রেসিডিয়াম ঘোষণা ইসি’র
সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের প্রত্যাখ্যান

দিনভর উত্তেজনা, নাটকীয়তা। রাতে থমথমে পরিস্থিতি শেষে সিলেট চেম্বারের প্রেসিডিয়াম কমিটি ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিটিতে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ প্যানেল থেকে নির্বাচিত পরিচালক তাহমিন আহমেদকে সভাপতি, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং আতিক হোসেনকে সহ-সভাপতি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে অপরপক্ষ এ ঘোষণাকে এক পেশি সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এমন সিদ্ধান্তকে অগঠনতান্ত্রিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে বয়কট করেছে সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে চেম্বার নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল জব্বার জলিল এই তিনজনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণার পর পুলিশ প্রহরায় চেম্বার ভবন ছাড়েন নির্বাচন কমিশনাররা।

সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রহমান জামিল ও সহসভাপতি প্রার্থী হুমায়ুন আহমদের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে ফলাফল ঘোষণার আগেই রাত ১১টার দিকে চেম্বার ভবন ত্যাগ করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অপর প্যানেল সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ। তারা নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অগঠনতান্ত্রিক ও একেপেশে আচরণের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের নেতারা।

গত শনিবার সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে সদস্যদের ভোটে সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের ১১ জন এবং সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ৭ জন নির্বাচিত হন। এর আগে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন। ফলে দুই প্যানেলেরই ১১ জন করে পরিচালক নির্বাচিত হওয়ায় প্রেসিডিয়াম নির্বাচন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টা থেকে সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচনে জন্য পরিচালকদের নিয়ে সভা ডাকেন নির্বাচন বোর্ড। 

সভাপতি পদে সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে আবু তাহের মো. শোয়েব, তাহমিন আহমদ ও ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদের নাম দেয়া হয়। অপরদিকে, সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে সভাপতি পদে একক প্রার্থী হিসেবে আব্দুর রহমান জামিলের নাম জমা দেওয়া হয়।  রাত পর্যন্ত দীর্ঘ আট ঘন্টার মতো আলোচনা ও সমাঝোতার চেষ্টা চালিয়েও দুই পক্ষ ঐক্যমতে পৌছতে পারেনি। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে রাত ৯টার দিকে সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রহমান জামিল ও সহ-সভাপতি প্রার্থী হুমায়ুন আহমদের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে চেম্বার ভবন ত্যাগ করেন সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের পরিচালকরা। এরই মধ্যে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের প্রার্থী তাহমিনকে আহমদকে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ ও আতিক হোসেনকে সহ-সভাপতি হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

চেম্বারের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, চেম্বার নির্বাচনে অর্ডিনারি, অ্যাসোসিয়েট, গ্রুপ শ্রেণি ও টাউন শ্রেণি এই চার গ্রুপে প্রার্থীরা অংশ নেন। প্রেসিডিয়াম নির্বাচনেও এ চার শ্রেণি থেকে প্রার্থী দিতে হয়। কিন্তু সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ থেকে সভাপতি ও সহসভাপতি পদে কেবল অর্ডিনারি শ্রেণি থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়। এটা গঠনতন্ত্র বিরোধী। তাই তাদের দুজনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

তবে সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রহমান জামিল বলেন, অতীতেও একটি গ্রুপ থেকে প্রার্থী দিয়ে চেম্বারের সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু আজকে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ অন্যায় ও একপেশেভাবে একটি প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য আমাদের প্রার্থিতা বাতিল করেছেন। যা অগ্রহণযোগ্য। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।

এদিকে চেম্বার নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল জানিয়েছেন, আমরা গঠনতন্ত্র অনুসারেই সব কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। গঠনতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার সুযোগ আমাদের নেই।

আরসি-০১


এ সংক্রান্ত ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন-