কিশোর-কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ২১, ২০২১
০৩:৪৪ অপরাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ২১, ২০২১
০৩:৪৬ অপরাহ্ন



কিশোর-কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সোস্যাল ইমপাওয়ারমেন্ট এন্ড লিগ্যাল প্রোটেকশন পোগ্রামের উদ্যোগে  "রাইট হেয়ার রাইট নাউ" - ফেস-২ প্রকল্পে  "কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতা" বিষয়ক কিশোর ও কিশোরী এবং সাংবাদিকদের  নিয়ে এক মতবিনিময়  সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটায় হবিগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ সভায়  অত্র প্রকল্পের কো- অর্ডিনেটর মো. সামছুল আলম সজলের পরিচালনায় ও হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি চৌধুরী মো. ফরিয়াদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ব্র্যাকের জেলা প্রতিনিধি  মো. আতাউর রহমান।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্যে মো. সামছুল আলম সজল বলেন,  ‘দেশে ১০-১৯ বছর বয়সী প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় তাঁরা নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকেন। তাঁদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরমোনের প্রভাবে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। এ সময় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন সম্পর্কে সঠিক পরামর্শ ও ধারণা তাঁদের চিন্তামুক্ত, স্বাভাবিক ও সুন্দর জীবন-যাপনে সহায়তা করতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি অনেকটা লজ্জাজনক হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তারা অনেক ভুল তথ্য পায়। অথচ শরীরে প্রজনন অঙ্গের সুস্থতার সঙ্গে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক কল্যাণকর অবস্থা হল প্রজনন স্বাস্থ্য।’

এই বিষয়ে কিশোর ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, তাদের ভয়ভীতি দূর করা, অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তোলা এ প্রকল্পের প্রধান কাজ।

এ প্রকল্প যুব জনগোষ্ঠী,  এস আর, এইচ আর, জেন্ডার ন্যায়বিচার,  ইয়ুথ এডাল্ট পার্টনারশিপ নিয়ে কাজ করছে।

পাচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি এ বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হলে ও অক্টোবর থেকে কাজ শুরু  হয়েছে, সারাদেশের ৯ টি জেলায় একযোগে এ প্রকল্পের কাজ চলছে, হবিগঞ্জের  পৌরসভায়  যুবকদের ৪ টি গ্রুপ করে এ প্রকল্প নিয়ে কাজ করে আসছেন কর্মীরা।

আলোচনার শেষে কিশোর ও কিশোরীরা তাদের বয়ঃসন্ধিকালের নানা প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন, কয়েকজন কিশোরী জানান, তাদের যখন প্রথম পিরিয়ড শুরু হয়, তারা এ বিষয়টি তাদের পরিবারে জানালে তারা কাউকে শেয়ার করার জন্য নিষেধ করেন, এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়।  তাদের পরিবার থেকে নিষেধ করে দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও স্কুলের ক্লাসে শারীরিক শিক্ষার ক্লাস পাঠ্যপুস্তক থেকে তুলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন, এবং কোথাও কোথাও ক্লাস থাকলে ও বাসা থেকে পড়ে আসার জন্য শিক্ষকরা বলে থাকেন, সেজন্য এ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে নানা সমস্যায় তারা ভুগে থাকেন বলে জানান।

পরে বয়ঃসন্ধিতে কিশোর ও কিশোরীদের নানান  নানান প্রতিবন্ধকতা ও এর সমাধান নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন সাংবাদিকরা।

সাংবাদিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন,  ডেইলি অবজারভারের জেলা প্রতিনিধি মো. শফিকুর রহমান, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান নিয়ন, সময় টিভি ও মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার রাশেদ খান, বিটিভির সৈয়দ সালিক আহমেদ, জিটিভির জেলা প্রতিনিধি মো. নুরউদ্দিন, সিলেট মিরর ও যায়যায়দিনের শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি সৈয়দ হাবিবুর রহমান ডিউক। 

উক্ত প্রোগ্রামে হবিগঞ্জের ১১জন সাংবাদিক,  বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি এবং কিশোর ও কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা অংশগ্রহণ করে উন্মুক্ত আলোচনা করেন।

এ বিষয়ে জেলা ব্যবস্থাপক মো আতাউর রহমান  জানান, মুলত কিশোর -কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা, অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন করাই এ প্রকল্পের মুল কাজ, আমি আশা করছি এ প্রকল্পের দ্বারা কিশোর ও কিশোরীরা অনেক উপকৃত হবেন, এজন্য তিনি সাংবাদিকদের কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

এস ডি/বি এন-০৫