সড়ক পথে যুক্ত হবে সিলেট-থাইল্যান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক


ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
০২:২৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
০২:২৫ পূর্বাহ্ন



সড়ক পথে যুক্ত হবে সিলেট-থাইল্যান্ড

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সড়কপথে থাইল্যান্ডকে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে।’ তিনি বলেন, ‘সিলেটের তামাবিল থেকে ভারত-মিয়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডে যাবে সড়ক যোগাযোগ। এতে ভারত সম্মত হয়েছে। অন্য দেশের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।’ উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সিলেট হাব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে এসময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) সিলেট নগরের ঐতিহ্যবাহী রেজিস্ট্রারি মাঠে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তাকে দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ড. আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন। 

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন উদ্দেশ্যে মানপত্র পাঠ করেন সিসিকের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ইয়াসমীন নাহার রুমা। পরে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মানপত্র, সম্মাননা ক্রেষ্ট ও সংবর্ধনা স্মারক স্বর্ণের ‘নগর চাবি’ ড. আব্দুল মোমেনের হাতে তুলে দেন। এর আগে সিসিক মেয়র, কাউন্সিলররা সংবর্ধিত অথিতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার কাজ করছে। মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বিশ্ব নেতাদের বানীতে যার স্বীকৃতি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’ তিনি বলেন, ‘আমি তাঁর সরকারের একটি দায়িত্ব পালন করছি মাত্র। সিলেট সিটি করপোরেশনের দেওয়া এ নাগরিক সংবর্ধনা সরকারের উন্নয়ন যাত্রার প্রতি সম্মান দেখানো বলেই আমি মনে করি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সিসিকের উন্নয়ন কাজের জন্য সরকার টাকা দিলে সেটা খরচ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার শর্ত সাপেক্ষে ১২শ ২৮ কোটি টাকা দিয়েছেন। কিন্তু এই বরাদ্ধ পেতে সিসিককে ৩০০ কোটি টাকা নিজস্ব ফান্ড থেকে দিতে হবে, যা তারা এর চেষ্টা করছেন।’

তবে সিটি করপোরেশনের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসেননি সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। সিটি মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরীর বিভিন্ন সময় আওয়ামী বিরোধী বক্তব্য রাখার অভিযোগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ‘বর্জন’ করেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জরুরি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেন তারা।

এ প্রসঙ্গে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাকে কেউ কেউ বলেছেন, আজকের আয়োজন আরিফ করেছেন। আমি বলেছি, আরিফ সাহেব করে নাই, করেছে সিটি করপোরেশন। বরং আপনাদের লজ্জা লাগা উচিত এই কারণে যে প্রধানমন্ত্রী এত ভালো কাজ করছেন, অন্য দলের লোক সেটি স্বীকার করছেন। সেটা গ্রহণ করছেন।’

‘আপনাদের তো ভালো লাগার কথা। আমি তো হলাম উসিলা মাত্র। তারা আমাকে নয়, সম্মান দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। যিনি আমাদের প্রতি সদয় হয়ে এতকিছু করছেন। সুতরাং সিলেটের উন্নয়নে সবাই মিলেমিশে কাজ করতে হবে।’

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংবর্ধনার জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই সিলেট নগরী আপনার-আমার সবার। কে কোন মতের, দলের সেটা দেখার বিষয় নয়। আমরা সবাই সিলেটের- এটাই মূল বিষয়।

‘এখানের ছেলে আমি, আমাদের সবার হৃদয়ে সিলেট। আমার কাছে কেউ কেউ বলেন যে মেয়র অন্য দলের। সুতরাং আপনি ওনার অনেক প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না। আমি বলি- সিলেট তো আমারও। মেয়র সাহেবরও। সুতরাং বৃহত্তর সিলেটের মঙ্গলের জন্য সব করতে হবে।’

জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা বর্জন করলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এই অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তৃতা দেন।

নাগরিক সংবর্ধনায় সিসিকের কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


এএফ/০২