শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
জানুয়ারি ০৩, ২০২২
০৬:২২ অপরাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০৩, ২০২২
০৬:২২ অপরাহ্ন
গ্লোবাল ক্লাইমেট মডেলে বাংলাদেশ ও পার্শ্ববর্তীদেশগুলোর আশেপাশের পাহাড়-পর্বতের উচ্চতার তথ্য না থাকায় দেশটি সঠিকভাবে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিতে পারে না বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণাটি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাবেক শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বর্তমানে নাসায় আবহাওয়া ও জলবায়ু বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত ড. আব্দুল্লাহ আল ফাহাদের নেতৃত্বে এ গবেষণাটি করা হয়।
পর্যবেক্ষিত (স্যাটেলাইট) ও গ্লোবাল ক্লাইমেট মডেল এর তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাতের জন্য মূলত বঙ্গোপসাগরের পানির তাপমাত্রা, আদ্রতা ও আমাদের দেশের আশেপাশের পাহাড় পর্বত (মেঘালয় পাহাড়, আরাকান পর্বতমালা, ও হিমালয়ের দক্ষিণ পাদদেশ) দায়ী।
গবেষণা পত্রটির মতে, গ্লোবাল ক্লাইমেট মডেলগুলোতে দেশের পাহাড় পবর্তগুলোর সঠিক উচ্চতার তথ্য না থাকায় মডেল সিমুলেশনে বঙ্গোপসাগর থেকে আদ্রতা নিয়ে বাতাস ঠিকভাবে বৃষ্টিতে রুপান্তরিত করতে পারে না। মেঘালয় থেকে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের একটি অঞ্চল সিলেট বিভাগ। কিন্তু গ্লোবাল ক্লাইমেট মডেলে সিলেটের পাশের মেঘালায় পর্বতের তথ্য ঠিকভাবে না থাকায় সিলেট বিভাগে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিতে পারে না এ মডেল। ফলে এক থেকে কয়েক বছর পর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কতোটুকু তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে না বর্তমান গ্লোবাল ক্লাইমেট মডেলগুলো।
অন্য গবেষকরা হলেন- কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ সাসকাচুয়ানের পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ, শাবিপ্রবির সহযোগী অধ্যাপক ড. তানভির আহমেদ, ইতালির ইন্টান্যাশানাল সেন্টার ফর থিওরিটিক্যাল পিজিক্স এর গবেষক মিনহাজুল কিবরিয়া এবং শাবিপ্রবির নাজিমুর রশীদ চৌধুরী। তারা সবাই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। এছাড়া এতে আরও কাজ করেছেন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির রিসার্চ সায়েন্টিস্ট ড. বোহার সিং। বর্তমানে তিনি ঋতুর জলবায়ু পূর্বাভাস নিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাথে গবেষণা করছেন।
গবেষকরা বলেছেন, দেশের জলবায়ু ও তার পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা এবং পূর্বাভাসের জন্য উচ্চমানের ভৌগোলিক তথ্য সম্বলিত গ্লোবাল ক্লাইমেট মডেল প্রয়োজন (high resolution simulation)। এতে মডেলের বঙ্গোপসাগরের পানির তাপমাত্রা ভালভাবে পূর্বাভাস করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এছাড়া দেশের ভৌগোলিক অবস্থান অদ্বিতীয় হওয়ায়, অন্য দেশের জন্য যে গাণিতিক মডেল কাজ করছে তা ব্যাবহার করলে জলবায়ু পূর্বাভাস ঠিকভাবে আসবে না।
গবেষণা পত্রটি ‘ইন্টারন্যাশানাল জার্নাল অফ ক্লাইমেটোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। এর প্রকাশক হিসেবে ছিলেন ‘রয়্যাল মিটিওরোলোজিক্যাল সোসাইটি’। গবেষণা পত্রটি 'The Role of Local Topography and Sea Surface Temperature on Summer Monsoon Precipitation over Bangladesh and North-East India' https://doi.org/10.1002/joc.7490 এই লিংকে পাওয়া যাবে।
এইচএন/আরসি-০৪