শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১৬, ২০২২
০২:২২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ১৬, ২০২২
০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন
তিন দফা দাবি ও বেগম সিরাজজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজাসহ প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে হামলার অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
আজ শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে শিক্ষার্থীদের উপর এ হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলায় ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী আহত এবং হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে কয়েকজন ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে জানা যায়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ এবং প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র ও আন্দোলনকারীদের বরাতে জানা যায়, প্রক্টর শিক্ষার্থীদের এক পাশের রাস্তা ছেড়ে দিতে বললে ছাত্রীরা না না বলে প্রতিবাদ জানান। পরে একপর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকানোর চেষ্টা করে এবং তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সেখানে ঢুকতে চেষ্টা করে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের উপর সহপাঠীদের উপর শিবির সন্দেহে হামলা চালায়।এসময় আন্দোলনে সমর্থনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থীরা আহত হয়। কিন্তু আহত শিক্ষার্থীদের কারো নাম তৎক্ষনাৎ জানা যায়নি। ছাত্রলীগের ছয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন।
হামলাকারীরা কারীদের মধ্যে রয়েছেন, ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ, রিশান তন্ময়, মাহবুবুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, শফিউল হক রাব্বী, আবু বক্কর, সজীবুর রহমান, মামুন শাহ, খলিলুর রহমান, সাব্বির হোসেন, সুমন সরকার, সাদ্দাম হোসেন পিয়াস এবং কিছুদিন আগে কর্মকর্তা পদে যোগদান করেছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মৃন্ময় দাশ ঝুটন সহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ বলেন, ‘আমরা একটা অ্যাম্বুলেন্সকে পথ করে দিতে গেলে তারা বাধা দেয়। তখন এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটু হাতাহাতি হয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর বলেন, ‘একটি অ্যাম্বুলেন্সকে রাস্তা করে দিতে সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী যান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স যেতে বাধা দিলে একটু হাতাহাতি হয়। এছাড়া বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।’
এ বিষয়ে জানতে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী সাদিয়া বলেন, ‘প্রথমে একটা অ্যাম্বুলেন্স আসলে আমরা সেটাকে পথ করে দিই। পরবর্তীতে আরেকটা অ্যাম্বুলেন্স আসলে আমরা সেটাকেও পথ করে দিই। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের পেছন পেছন এসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের মাঝে ঢুকে পড়ে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এসময় তারা ছাত্রীদেরকে ধাক্কা দেয়। একপর্যায়ে আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসা ছাত্রদেরকে তারা মারধর করেন।’
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রক্টরিয়ার বডির সদস্যরা এসে শিক্ষার্থীদের এক পাশের রাস্তা ছেড়ে দিতে বলে। পরে একপর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকানোর চেষ্টা করলে ছাত্রীরা অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার সুযোগ করে দেন। কিন্তু পেছনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আন্দোলনে ঢুকে আন্দোলন নৎসাত করার চেষ্টা করে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের সহপাঠীদের উপর হামলা চালায়। এতে আন্দোলনে সমর্থনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০-১২ জন আহত হয়।
হামলাকারীরা কারীদের মধ্যে রয়েছেন, বর্তমানে বিশ্বদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মৃন্ময় দাস ঝুটন, আশরাফ কামাল আরিফ, খলিলুর রহমান, রিশান তন্ময়, মাহবুবুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, শফিউল হক রাব্বী, আবু বক্কর, সজিবুর রহমান, মামুন শাহ, রিশাদ ঠাকুর, সাব্বির হোসেন, সুমন সরকারসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ছয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন।
হামলার বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ বলেন, ‘আমরা একটা অ্যাম্বুলেন্সকে পথ করে দিতে গেলে তারা বাধা দেয়। তখন এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটু হাতাহাতি হয়। ’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. আলমগীর কবীর বলেন, ‘একটি অ্যাম্বুলেন্সকে রাস্তা করে দিতে সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী যান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স যেতে বাধা দিলে একটু হাতাহাতি হয়। এছাড়া সেখানে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি’।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের সাথে মুঠোফোনেব একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে ফোন কলে পাওয়া যায়নি।
রাতে এক ব্রিফিংয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সাদিয়া বলেন, আমাদের উপর ছাত্রলীগের হামলা চালানোর পর সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও আমাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তা হিনতায় ভুগছি। তাই অন্যান্য হলের এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।
এরআগে তিনি বলেন, সডকে অ্যাম্বুলেন্স আসলে আমরা সেটাকে পথ করে দিই। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের পেছনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের মাঝে ঢুকে পড়ে। এসময় তারা ছাত্রীদেরকে ধাক্কা দিতে থাকে এবং একপর্যায়ে আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসা ছাত্রদের বেড়ধক মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, শাহরিয়ার আবেদীন, ইয়াছির সরকার, সামিউল সাফিন, নাফিজ হাসান, অন্তিক, রুপেল চাকমা, মাইনুল ইসলাম রাশুসহ আরো অনেকে। এছাড়া ছাত্রীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ধাক্কা ও হেনস্তা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে ছাত্রীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোট। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ১১টা) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান রয়েছে।
এইচএন/আরসি-০৮