সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে শুরু হয়নি নমুনা পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক


জানুয়ারি ১৫, ২০২২
১১:২২ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ১৫, ২০২২
১১:২৪ অপরাহ্ন



সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে শুরু হয়নি নমুনা পরীক্ষা
# প্রস্তুতি থাকলেও আসেনি নির্দেশনা # সিলেটে বাড়ছে সংক্রমণের শঙ্কা

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নির্দেশনা না আসায় সব প্রস্তুতি থাকা সত্তে¡ও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়নি। বৃহস্পতিবার থেকে এই কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল। 

এদিকে, যুক্তরাজ্য থেকে সিলেটে বিমান যোগাযোগ চালু থাকায় প্রতি সপ্তাহেই অনেক প্রবাসী সিলেটে আসছেন। এতে করে সিলেটে ওমিক্রন নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে যারাই বিদেশ থেকে সিলেটে আসবেন তাদের বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গেই র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করার সিদ্ধান্ত হয়। এই টেস্টের মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়া যাবে। যাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসবে তাদের পাঠানো হবে খাদিমপাড়া ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে।  টেস্টের জন্য গত বুধবার কিটসহ টেকনোলজিস্ট পাঠায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে টেস্ট শুরুর কোনো ধরনের নির্দেশনা না পাওয়ায় এ দিন বিমানবন্দরে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়নি।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বিমানের একটি ফ্লাইটে ২৩০ জন লন্ডন ফেরত যাত্রী সিলেট বিমানবন্দরে নামেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘টেস্ট করার কথা থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরে কোনো টেস্ট হয়নি।’ কেন হয়নি তা জানতে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

আর সিলেট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও ওসমানী বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য টিমের প্রধান ডা. আহমদ সিরাজুম মুনীর সিলেট মিররকে বলেন, ‘সব প্রস্তুতি থাকার পরও মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কোনো লিখিত নির্দেশনা না পাওয়ায় আমরা টেস্ট করতে পারিনি। নির্দেশনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা টেস্ট শুরু করব।’ তবে টেস্ট না হলেও যাত্রীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রস্তুতি থাকার পরও কেন পরীক্ষা শুরু করা যায়নি এমন প্রশ্নে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘আসলে আমাদের সব প্রস্তুতি ছিল। নির্দেশনা নিয়েও কোনো সমস্যা ছিল না। তবুও আমরা গতকাল টেস্ট করতে পারিনি। এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে সমন্বয় করার প্রচেষ্টা চলছে। আশা করছি খুব দ্রæতই আমরা পরীক্ষা শুরু করতে পারব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে সিলেটে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। এই সময়ে বিভাগে ২৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে সংক্রমিত হন মাত্র ৮১ জন। প্রতি সপ্তাহে লন্ডন, ম্যানচেষ্টার থেকে সিলেটে ফ্লাইট আসায় ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কারোরই হচ্ছে না করোনা পরীক্ষা। কোয়ারেন্টিন নিয়েও নেই কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা। এ অবস্থায় ওমিক্রন নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে সিলেটে।

এদিকে, সিলেটে করোনা সংক্রমণের সঙ্গে বাড়ছে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও। সিলেট করোনা আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে বর্তমানে প্রতিদিন ৩০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কিছুদিন আগে এই সংখ্যা ছিল ৪ থেকে ৫ এ।

হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. মিজানুর রহমান সিলেট মিররকে বলেন, ‘হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা বাড়ছে। তবে একটি বিষয় আমাদের নজরে এসেছে তা হলো যারা ঢাকা থেকে ও বিদেশ থেকে আসছেন তাদের মধ্যেই জ্বর-সর্দির মতো উপসর্গ বেশি। এমনকি অনেকের পজিটিভও আসছে। তাই বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।’

এদিকে, বিমানবন্দরে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু হলে কোয়ারেন্টিন নীতিও শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে যেসব দেশ উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সে সব দেশ থেকে যাত্রীরা এলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তবে এসব দেশ থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে যাদের দুই ডোজ টিকা দেওয়া, শরীরে কোনো উপসর্গ নেই এবং বিমানবন্দরের র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে তারা বাসায় চলে যেতে পারবেন।

তবে যাদের দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়নি অথবা শরীরে করোনার উপসর্গ (জ্বর-সর্দি-কাশি) থাকবে তাদের অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে। আর যাদের অ্যান্টিজেন টেস্টে রিপোর্ট পজিটিভ আসবে তাদের খাদিমপাড়া ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হবে।

এনএইচ/আরসি-১১