নিজামউদ্দিন লস্কর ময়নার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক


জানুয়ারি ১৭, ২০২২
০৬:২৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ১৭, ২০২২
০৬:২৩ পূর্বাহ্ন



নিজামউদ্দিন লস্কর ময়নার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নিজামউদ্দিন লস্করের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি ৬৯ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান সবার প্রিয় ‘ময়না ভাই’। মৃত্যুর আগে তিনি একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মৃত্যুবার্ষিকীতে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া কামনা করা হয়েছে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নিজামউদ্দিন লস্কর ময়না ১৯৫২ সালের ৯ এপ্রিল সিলেট শহরের তোপখানা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নগরের লামাবাজার এলাকায় থাকতেন। সিলেট নগরের দুর্গাকুমার পাঠশালাতে তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরু। সিলেট সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ, বেতার ও টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠিত একজন নাট্যকার ও নাট্যশিল্পী ছিলেন তিনি। তাঁর অভিনীত ও নির্দেশিত নাটকের সংখ্যা একশর বেশি। চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। 

১৯৬২ সালে প্রাসাদ বিশ্বাস রচিত ‘পরাজয়’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে অভিনেতা হিসেবে তাঁর মঞ্চে অভিষেক। ১৯৬৯ সালে সিলেট রেডিওতে নিয়মিত নাট্যশিল্পী হিসেবে নির্বাচিত হবার পর থেকে শতাধিক বেতার নাটকেও অভিনয় করেছেন। স্বাধীনতার পর বেতার নাট্যকার ও নাট্য প্রযোজক হিসেবে নির্বাচিত হন। বেতারে সরাসরি বাচ্চাদের অনুষ্ঠানে নাটক প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। 

নিজামউদ্দিন লস্কর ১৯৯০ সালে প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন। টেলিভিশন নাটক লেখার পাশাপাশি টেলিনাটক, টেলিফিল্ম এবং টেলিসিরিয়ালেও অভিনয় করেছেন। বিএ শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন তিনি। 

১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট সন্মুখসমরে গুলিবিদ্ধ হন এবং শিলং মিলিটারি হাসপাতালে অপারেশনের এক মাস পর ছাড়া পান। সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের প্রধান পরিচালক হিসেবে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে নাট্য প্রশিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ ১৫ বছর কাজ করেছেন। তিনি সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের উপদেষ্টা ছিলেন। সিলেট ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক মৌলিক গ্রন্থের পাশাপাশি তাঁর একাধিক অনুদিত গ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে : ‘আই লাভ্ড এ্যা গার্ল’ (অনুবাদ, ২০০০), ‘একাত্তরে রণাঙ্গনে’ (স্মৃতিধর্মী, ২০০৬), ‘হৃদয় বদল’ (রূপান্তরিত উপন্যাস, ২০০৮), ‘দ্য মঙ্ক হু সোল্ড হিজ ফেরারি’ (অনুবাদ, ২০০৮), ‘ডেথ অব অ্যা ডিক্টেটর’ (অনুবাদ, ২০০৯) এবং ‘ব্রেড উইনার’ (অনুবাদ, ২০১০)। এ ছাড়াও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে তিনি ছোট গল্প, নিবন্ধ প্রভৃতি লিখেন। সিলেটের সংস্কৃতি অঙ্গনের এই দিকপাল ২০১৯ সালে ‘সংস্কৃতি/ক্রীড়া’ ক্যাটাগরিতে পান ‘সিলেট মিরর পুরস্কার’। এ সময় তাঁর হাতে স্মারক ক্রেস্ট ও সম্মাননা-স্বরূপ ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।

আরসি-০৪